পদ্মা সেতুর সাজে ‘সেজেছে’ রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্র হাতিরঝিল। ছুটির দিনে আলো (লাইটিং) আর দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে যে কেউ মনে করতে পারেন, আজ বুঝি চাঁদরাত।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর হাতিরঝিলে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত তারে জ্বলছে লাল-সবুজ ঝাড়বাতি। এ যেন গাছের সবুজের সঙ্গে আজ ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের বিজয় উৎসবের মিতালি।
কিছুদূর পর পর পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ছোট-বড় ব্যানার-ফেস্টুন-উৎসবের বার্তা। ঘুরতে আসা মানুষের মনেও অন্য রকম ভালো লাগা।
অনেকে একা ঘুরতে এসে বলছিলেন, এমন পরিবেশ হবে জানতেন না। জানলে পরিবার নিয়েই আসতেন। ব্যবসায়ী আহসান আজিজ সোহাগ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আজ শুক্রবার হলেও ছোট একটা কাজে দুপুরে গুলশানের অফিসে গিয়েছিলাম। এখন যাওয়ার সময় দেখি হাতিরঝিলে বাড়তি মাত্রা যোগ হয়েছে; অসাধারণ ঝাড়বাতি আর পদ্মা সেতু উদ্বোধনের নানা আয়োজন। উৎসব-উৎসব ভাব। মনে হচ্ছে একা এসে ভুলই করলাম। এমন সুন্দর একটা ঐতিহাসিক দিনের আগে পরিবার নিয়ে বের হওয়া উচিত ছিল। ’
শিক্ষার্থী ফাহমিদা আক্তার বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে এসেছিলেন হাতিরঝিলে। তিনি বলেন, ‘মাঝেমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দিন বন্ধুদের নিয়ে এদিকে আসা পড়ে। তবে আজকের আসাটা একটু ভিন্ন। এত সুন্দর করে সাজানো হয়েছে হাতিরঝিলকে, সব জায়গায় জোনাকির মতো আলো জ্বলছে! বন্ধুরা মিলে অনেক মজা করছি। ’
ঘুরতে আসা অনেকে বলছিলেন, আজ পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনও পরিবার নিয়ে হাতিরঝিলে আসবেন তাঁরা। সরকারি কর্মকর্তা সারোয়ার আলম বলেন, ‘আজকে তো শুধু লাইটিং দেখলাম। কাল লেজার শোর পাশাপাশি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে চলে আসব। ’
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে হাতিরঝিলের কারওয়ানবাজার, মগবাজার, পুলিশ প্লাজা, রামপুরা থেকে শুরু করে সব প্রবেশপথ এবং একমুখী হাতিরঝিল সড়কের গাছগুলোতে ঝাড়বাতি লাগানো হয়েছে। সন্ধ্যার পরই লাল-সবুজসহ নানা রঙের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছে হাতিরঝিল এলাকা। অন্য শুক্রবারের চেয়ে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি অনেক বেশি। গতকালই লেজার শো ভেবে অনেকে সপরিবারে আসেন দেখতে। রামপুরার ব্যবসায়ী আল-আমীন বলেন, ‘টিভি ভবনের পেছনে আমার বাসা। ভেবেছিলাম আজ (গতকাল) লেজার শো দেখানো হবে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগের দিন তাই পরিবার নিয়ে হাতিরঝিলে এসেছি। কিন্তু জানলাম আগামীকাল (আজ) হবে। তবু খারাপ লাগছে না। পরিবেশটা অনেক সুন্দর। ’
ঘুরতে আসা অনেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত ব্যানারের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলেন। দিচ্ছিলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট। নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে লিখছিলেন ‘ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। ’ শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, ‘স্মৃতি হিসেবে রেখে দিলাম। যাতে প্রতিবছর একবার করে ফেসবুক মনে করিয়ে দেয়। পদ্মা সেতু হওয়াতে আমার গ্রামের বাড়ি বরিশালে যেতে কষ্ট অনেক কম হবে। সময়ও বাঁচবে। ’
এ জাতীয় আরো খবর..