জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকার দেশের শত্রু বিএনপি-জামায়াত ও ঘরের শত্রু দুর্নীতিবাজদের আক্রমণের মুখে। ভোটের আগে সরকারকে উৎখাত করার চক্রান্ত করছে। এই চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে। অস্বাভাবিক সরকার আনার চক্রান্ত ধুলিসাৎ করে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন টৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি আরো বলেন, দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা, সামাজিক সুরক্ষা ও ইন্টারনেটের ব্যবহারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে একটি স্থায়ী ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য সংবিধান সংশোধন পর্যালোচনা কমিটি গঠন করতে হবে। সামাজিক শান্তি ও সমতা বিধানের জন্য সংখ্যালঘু ও আদিবাসী কমিশন গঠন এবং সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি জানান তিনি।
বিদেশে টাকা পাচারকারীরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার ছোট ভাই প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর সাক্ষাৎ শিষ্য বলে দাবি করে জাসদ সভাপতি বলেন, এরা ডাবল চোর। এরা দেশের ভেতরে একবার চুরি করে, বিদেশে টাকা পাঠানোর জন্য আরেকবার চুরি করে। দেশে এই ডবল চোরদের ধরার জন্য আইন আছে, মামলাও আছে। তাই বিদেশে পাচার করা টাকা আনার জন্য যে প্রস্তাবটা হয়েছে, দেশের আইনের সঙ্গে তা সাংঘর্ষিক। আমি বাতিল করার প্রস্তাব করছি।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ নিয়ে যারা সমালোচনা করেছিল, তাদের সমালোচনা করে হাসানুল হক ইনু বলেন, তারা দাতাদের শিখিয়ে দেওয়া বুলির বাইরে একটা কথাও বলতে পারে না। তারা হচ্ছেন দাতাদের তোতাপাখি। শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর কাজ সফলভাবে করার মাধ্যমে প্রমাণ করলেন, এসব প্রাজ্ঞ, বিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞরা যোগ্যতার উচ্চতায় শেখ হাসিনার ধারেকাছেও না। শেখ হাসিনা অনেক পরিকল্পনাবিদ ও সাহসী রাজনৈতিক নেতা, বিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ। তার মতো প্রশ্নাতীত দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ এই বাংলায় নেই, উপমহাদেশেও নেই।
জাসদ সভাপতি ইনু বলেন, মূল্যস্ফীতি আটকাতে হবে। গরিবদের কেনার ক্ষমতা বাড়াতে হবে। এজন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর ভর্তুকি দিতে হবে। শ্রমিকদের রেশন কার্ড দিতে হবে। কমমূল্যে খাদ্য বিক্রি করতে হবে। বাজার সিন্ডিকেট ধ্বংস করতে হবে। দ্নুীতিবাজদের সিন্ডিকেট ধ্বংস করতে হবে।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডিজিটাল সেন্টার চালু ও ডিজিটাল কূটনীতি চালুর প্রস্তাব করেন। ইন্টারনেটের ওপর প্রস্তাবিত ভ্যাট-ট্যাক্স, ল্যাবটপ ও প্রিন্টারের ওপর ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবিও জানান তিনি।
ক্ষমতাসীন জোটের নেতা ইনু বলেন, বাজেট বাস্তবায়নে রাজনৈতিক শান্তি দরকার। অশান্তির রানী খালেদা জিয়া জেলে থাকলেও বিএনপি-জামায়াত জঙ্গি হেফাজত চক্র, যারা মিমাংসিত বিষয়কে অমিমাংসিত করে এবং মানে না, তারা দেশ শত্রু, মাঠে নেমেছে। ভোটের আগে শেখ হাসিনা সরকারকে উৎখাত করতে চায়। অপরদিকে চলছে ঘরের ভেতরে দুর্নীতিবাজ ঘরকাটা ইঁদুরদের উৎপাত। শেখ হাসিনার সরকার, আমাদের সরকার, দুই শত্রুর আক্রমণের মুখে। দেশ শত্রুর আক্রমণের মুখে, ঘরের শত্রুর আক্রমণের মুখে। ভোটের আগে যারা সরকার উৎখাতের প্রস্তাব দিচ্ছে, তারা সাংবিধানিক পদ্ধতি বানচাল করতে চায়। এই ভয়াবহ চক্রান্তকে মোকাবিলা করতে হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..