আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ছাড়া বন্যার্তদের পাশে কেউ নেই বলে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ অবাস্তব বলে দাবি করেছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের একটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী এ কথা বলেন।
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। জমিয়তের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, বন্যা শুরুর পর থেকে সর্বস্তরের আলেম-ওলামা, রাজনৈতিক দল, সংগঠন, সেবা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এবং সাধারণ মানুষ দুর্দশাগ্রস্ত বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ জন্য সবাইকে জমিয়ত আন্তরিক মোবারকবাদ জানাচ্ছে। সুতরাং ‘“আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ছাড়া বন্যার্তদের পাশে কেউ নেই” মর্মে তথ্যমন্ত্রী সম্প্রতি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ অবাস্তব।’
জমিয়তের মহাসচিব বলেন, ‘আমরা কয়েক দফায় সুনামগঞ্জ ও সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপকভাবে ত্রাণ তৎপরতা চালিয়েছি। আমাদের সহযোগী সংগঠন যুব জমিয়ত বাংলাদেশ, ছাত্র জমিয়তসহ স্থানীয় শাখাসমূহের পক্ষ থেকেও খাদ্যদ্রব্য ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে।’
মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনা করে দলের সভাপতি শায়খ যিয়া উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে ১৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় ত্রাণ কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
বন্যার্তদের পর্যাপ্ত ত্রাণসহায়তা দেওয়াসহ আট দফা দাবি জানিয়েছে জমিয়ত। দাবিগুলো হলো বন্যাকবলিত জেলাগুলোকে অনতিবিলম্বে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে ত্রাণসহায়তা নিশ্চিত করা, ঘরবাড়িহারা মানুষদের পুনর্বাসিত করা, ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ ও রাস্তাঘাটগুলোর সংস্কার, সিলেটের সুরমা–কুশিয়ারা ও বরাকের সংযোগস্থল বা ত্রিমোহনার পাশে অবস্থিত আমলশিদের বাঁধটিকে শক্তিশালী বেড়িবাঁধে পরিণত করা, কম গুরুত্বপূর্ণ মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ কমিয়ে বন্যায় ক্ষতিপূরণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো।
সংবাদ সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীবসহ কারাবন্দী আলেমদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, অর্থবহ ও গ্রহণযোগ্য করার জনদাবি পূরণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ারও দাবি জানানো হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, আবদুর রব ইউসুফী ও আবদুল কুদ্দুস কাসেমী, সহকারী মহাসচিব জাকারিয়া আমিনী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসাইন প্রমুখ।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের এই অংশটি সম্প্রতি বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে বের হয়ে যায়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকে কেন্দ্র হেফাজতে ইসলামের সহিংসতার ঘটনায় করা মামলায় জমিয়তের ২৫ জন নেতা কারাবন্দী হন। বিভিন্ন মামলায় আসামি হয়ে দলটির ২৯ জন নেতা পলাতক ছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে দলটি বিএনপির জোট ছেড়ে আলাদা অবস্থান নেয়। জোট ছাড়ার পরপরই জুনায়েদ আল-হাবীব ছাড়া জমিয়তের প্রায় সব নেতা মুক্তি পান।
এ জাতীয় আরো খবর..