যশোর সেনানিবাসে আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণে যৌথ প্রশিক্ষণ ‘এক্সারসাইজ সম্প্রীতি-১০’ এবং একই দিনে সিলেটের জালালাবাদ সেনানিবাসে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর যৌথ প্রশিক্ষণ ‘এক্সারসাইজ টাইগার শার্ক’ সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
যশোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘এক্সারসাইজ সম্প্রীতি-১০’ অনুশীলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২০ মাউন্টেন ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং মেজর জেনারেল প্রবীণ চার্ব্রা। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং মেজর জেনারেল মো. নূরুল আনোয়ার।
এছাড়া এ অনুষ্ঠানে ভারত ও বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জেসিও এবং অন্যান্য পদবির সেনাসদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আইএসপিআর জানায়, ২০১০ সাল থেকে এই অনুশীলনটি উভয় দেশ দ্বিপাক্ষিকভাবে আয়োজন করে আসছে। অনুশীলনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারতের সেনাবাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান ইতিবাচক সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করা।
‘এক্সারসাইজ সম্প্রীতি-১০’ বাংলাদেশ ও ভারতের সেনাবাহিনীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন। গত ৫ জুন থেকে শুরু হওয়া এই অনুশীলনে উভয় দেশের দেড় শতাধিক অফিসার, জেসিও ও অন্যান্য পদবির সেনাসদস্য অংশগ্রহণ করেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এবং মেজর জেনারেল প্রবীণ চার্ব্রা অনুশীলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করেন।
যশোর সেনানিবাসে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণে যৌথ প্রশিক্ষণ ‘এক্সারসাইজ সম্প্রীতি-১০’ অনুষ্ঠিত হয়। ছবি : আইএসপিআর
এদিকে সিলেটে জালালাবাদ সেনানিবাসে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর মধ্যে আয়োজিত যৌথ প্রশিক্ষণ ‘এক্সারসাইজ টাইগার শার্ক-৩৯’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ও এরিয়া কমান্ডার সিলেট এরিয়া মেজর জেনারেল হামিদুল হক। সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন হেলেন গ্রেইস লাফেব।
গত ২৫ মে থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ফোর্স, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সোয়াডস এবং ইউকে-এর স্পেশাল ফোর্স-এর সদস্যদের সমন্বয়ে এ যৌথ প্রশিক্ষণ পরিচালনা করা হয়। এই প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য ছিল এন্টি টেরোরিজম সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান, ক্লোজ কোয়ার্টার ব্যাটেল এবং কাউন্টার টেরোরিজম, ফায়ারিং বিষয়ক অভিজ্ঞতা ও বিশেষ জ্ঞান বিনিময়। অনুশীলনে বিশেষায়িত দলের মাধ্যমে জল, স্থল এবং আকাশ পথে অনুপ্রবেশের প্রশিক্ষণও পরিচালিত হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৩ জন প্যারা কমান্ডো, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ১০ জন সোয়াডস সদস্য এবং যুক্তরাষ্ট্র স্পেশাল ফোর্সের ১২ জন সদস্য এ অনুশীলনে অংশগ্রহণ করেন।
‘এক্সারসাইজ টাইগার শার্ক-৩৯’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে এসআইঅ্যান্ডটির কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল চৌধুরী মোহাম্মদ আজিজুল হক হাজারীসহ সেনাসদরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে আসা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গসহ সিলেট অঞ্চলে কর্মরত ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন পদবির সেনাসদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আইএসপিআর আরো জানায়, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এই অনুশীলন দুটি সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী প্রধানকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও তিনি এই দুই অনুশীলন কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সফলভাবে সম্পন্ন করায় অংশগ্রহণকারী সব সদস্য এবং আয়োজকদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।
এ জাতীয় আরো খবর..