×
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৮-১৪
  • ৭৭ বার পঠিত
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঢাকার নিউ মার্কেট এলাকায় দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলীকে (২৪) হত্যার মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে ১০ দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের (রিমান্ডে) অনুমতি পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

বুধবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় ঢাকার মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদের আদালত এই আদেশ দেন। তার আগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাদের আদালতে হাজির করা হয়।
পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

বিএনপিপন্থী আইনজীবী হিসেবে পরিচিত ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী ওমর ফারুখ ফারুকী সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশের রিমান্ড আবেদন পর্যালোচনা করে আদালত ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। আমরা আদালতের কাছে ন্যায়বিচার দাবি করেছি।’ আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী ওকালতনামা দেননি বলে জানান এই আইনজীবী।
 
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে গত ১৬ জুলাই ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে দুজন নিহত হন।

তাদের একজন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সবুজ আলী (২৬) এবং অন্যজন নিউ মার্কেট এলাকার এক দোকানের কর্মচারী মো. শাহজাহান (২৪)। এ ঘটনায় নিউ মার্কেট থানায় দুটি হত্যা মামলা করা হয়। শাহজাহান আলীকে হত্যার অভিযোগে তার মা আয়শা বেগম অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে এ মামলা করেন।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে ছিলেন আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমান।

গত মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) নৌপথে ‘পালানোর সময়’ রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। পরে তাদের শাহজাহান হত্যার ইন্ধনদাতা হিসেবে গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ।

বুধবার বিকেল ৫টা ৫৬ মিনিটে আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে আদালতে নেওয়ার উদ্দেশে ঢাকার মিন্টো রোডে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয় বের করা হয়। তাদেরকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানের সামনে-পেছনে ছিল পুলিশের কড়া নিরাপত্তা। আদালত চত্বরে প্রিজনভ্যান থেকে নামিয়ে আদালত কক্ষে সময় বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়েন।

এ সময় তাদের মাথায় নিরাপত্তা হেলমেট পরা ছিল। আদালত কক্ষ থেকে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময়ও একই ঘটনা ঘটে। শত শত বিক্ষুব্ধ আইনজীবী, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের। রিমান্ড শুনানির জন্য এদিন আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের পাশাপাশি সেনা ও বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।
বাংলাদেশ এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট কম্পানি লিমিটেড (বেক্সিমকো) গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে শিল্পপতি এ রাজনীতিক পূর্ণ মন্ত্রীর পদমর্যাদা নিয়ে এ দায়িত্ব পালন করেছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সালমা ইসলামকে হারিয়ে দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১ আসনে পুনর্নির্বাচিত হন সালমান এফ রহমান।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন আইনজীবী আনিসুল হক। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তাঁকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (আখাউড়া ও কসবা) আসন থেকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর শেখ হাসিনা তাঁকে আইনমন্ত্রী করেন। সেই থেকে তিনি আইনমন্ত্রীর পদে ছিলেন।

ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান সেদিন জানিয়েছিলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশে ছেড়েছেন। বর্তমানে শেখ হাসিনা ভারতে আছেন বলে জানা গেছে। গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত সবার ধারণা ছিল, শেখ হাসিনার দেশত্যাগের আগে বা পরে সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকও দেশ ছেড়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat