×
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৭-১০
  • ৫৯ বার পঠিত
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংক্রান্ত বিষয়বস্তুর ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়ে সব পক্ষকে এ স্থিতাবস্থা মেলে চলতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

কোটা পদ্ধতি নিয়ে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর করা আবেদনে শুনানির পর বুধবার এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি আদেশে বলেন, ‘স্টেটাসকো মানে হলো স্থিতাবস্থা, সবাই আপনারা তা জানেন। অর্থাৎ এটা নিয়ে আর কোনো কথা হবে না।

লিভ টু আপিল (রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) না আসা পর্যন্ত যার যার কাজে ফিরে যান।’ এরপর আদালত আগামী ৭ আগস্ট পরবর্তী শুনানি ও আদেশের তারিখ রাখেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

আর রিটকারীপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী।
আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের আদেশেও আছে আন্দোলনকারীদের কোনো বক্তব্য থাকলে তারা আইনজীবীর মাধ্যমে আপিল বিভাগে এসে দিতে পারবে। তাই এখন আর এই আন্দোলনের যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। এখন উচিত এটা (আন্দোলন) বন্ধ করে নিজ নিজ অবস্থানে ফিরে যাওয়া।

আন্দোলন করে জনদুর্ভোগ বাড়ানোর যৌক্তিক কোনো কারণ নেই।’
এর আগে শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, কোটা পদ্ধতি রাখা না রাখা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। হাইকোর্ট এ নিয়ে রায় দিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে সে রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। আপনারা (আপিল বিভাগ) সে আবেদনে নো অর্ডার দিয়ে বলেছিলেন নিয়মিত লিভটু আপিল করতে।

কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে এখনো স্বাক্ষর হয়নি। ফলে আমরা নিয়মিত লিভ টু আপিল ফাইল করতে পারছি না। আমরা স্থগিতাদেশ চাচ্ছি। কারণ হচ্ছে সরকারি চাকরির পরীক্ষাগুলোতে ব্যঘাত ঘটছে। জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষাসহ অনেকগুলো নিয়োগ পরীক্ষা আটকে আছে।
আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীর পক্ষে এসেছি (আবেদন করা হয়েছে)। তারা কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে নেই। তারা বিষয়টির একটি ন্যায্য সমাধান চাচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা এই আবেদনটি করেছেন। আমরা আপাতত হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ চাচ্ছি। 

রিটকারীপক্ষের আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী শুনানিতে বলেন, আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, তারা কিন্তু কোটা চাইনি। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা দেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর এ কোটা পদ্ধতি ছিল না। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ৫ বছর কোটা পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে বলা ছিল ৩০ শতাংশ কোটা পূরণে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে নিয়ে যেন কোটা পূরণ করা হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনি পর্যন্ত কোটা পদ্ধতি কখনোই করা হয়নি। এ অবস্থায় ২০১৮ সালে একটা আন্দোলন হয়। বলা হলো, কোটা থাকলে জাতি মেধাহীন হয়ে যাবে। পরে এই আন্দোলনের কারণে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে একটা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হয়।

আমার নিবেদন হচ্ছে- রায় পাওয়ার পরে লিভ টু আপিল দায়ের করা পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় বহাল থাকুক। তাছাড়া কোটা পদ্ধতি নিয়ে আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত আছে। সেখানে কোটা পদ্ধতি যথাযথভাবে অনুসরণ করার নির্দেশনা ছিল। সুতরাং হাইকোর্টের রায় যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় থাকুক। হাইকোর্টের রায় স্থগিতে আমি আপত্তি জানাচ্ছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat