×
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৫-০৯
  • ৫৭ বার পঠিত
তাকে ডাকা হয় মিস্টার ডিপেন্ডেবলস। ২২ গজে ব্যাট হাতে দলকে নির্ভরতা দেয়ার সক্ষমতার কারণেই এমন নাম পেয়েছেন মুশফিকুর রহিম। টিনএজার অবস্থায় অভিষেক হওয়া মুশফিক জাতীয় দলে কাটিয়ে ফেলেছেন ১৯টি বসন্ত। অসংখ্য ম্যাচে বাংলাদেশকে বাঁচিয়েছেন লজ্জার হাত থেকে, জিতিয়ে এনে দিয়েছেন আনন্দের উপলক্ষ। জাতীয় দলকে দিয়েছেন নেতৃত্বও।
২০০৫ সালে ১৮তম জন্মদিনের দিন কয়েক পরেই জাতীয় দলে অভিষেক হয় মুশফিকুর রহিমের। সেটি ছিল বাংলাদেশের প্রথম ইংল্যান্ড সফর। অনেকটা আকস্মিকভাবেই মুশফিককে দলে নিয়ে একটা জুয়া খেলেছিল নির্বাচকরা।

ক্রিকেটের তীর্থস্থান খ্যাত লর্ডসে অভিষেক হয় মুশফিকের। এর মধ্যে দিয়ে মাঠে সবচেয়ে কম বয়সে টেস্ট ম্যাচে অংশ নেওয়ার রেকর্ড গড়েন মুশফিক। তবে অভিষেক টেস্টে আহামরি কিছু করে দেখাতে পারেননি তিনি। বাংলাদেশের টেস্ট খেলার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সেসব দিনে তেমন কিছু আশাও ছিল না অবশ্য। ইনিংস ব্যবধানে হারা সেই টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৯ রান করেন ৫৬ বল খেলে। এটাই অবশ্য দলের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান ছিল। আর বল খেলার দিক থেকে তৃতীয়। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ রানেই শেষ হয় মুশফিকের ইনিংস।

ক্যারিয়ারের শুরুতে দলের বাকিদের মতোই অধারাবাহিক ছিলেন মুশফিক। ২০০৫ সালে অভিষেকের পর ২০০৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ বছরে ১৬টি টেস্টে খেলে মাত্র ২৩.৪১ গড়ে ৬৭৯ রান করেছেন তিনি। ছিন না কোনো সেঞ্চুরিও। একই অবস্থা ওয়ানডে ক্রিকেটেও। ২০০৬ সালে ওয়ানডে অভিষেক হয় মুশফিকের। ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রথম পাঁচ বছরে ৮৪টি ওয়ানডে খেলে মাত্র ২৩.৫৪ গড়ে ১৪৬০ রান করেছিলেন তিনি।

তবে সময়ের সঙ্গে বাংলাদেশের সবচেয়ে উন্নতি করা খেলোয়াড়টি নিঃসন্দেহে মুশফিক। আর তার বদলে যাওয়ার মন্ত্রটা হচ্ছে পরিশ্রম। টাইগারদের ডেরায় আজও সবচেয়ে পরিশ্রমী খেলোয়াড়টার নাম মুশফিকই। ২০১০ সালের শুরু থেকে পরের ১৪ বছরে ৭২ টেস্টে ৪১.৬৪ গড়ে ৪৯৯৭ রান করেছেন তিনি। হাঁকিয়েছেন ১০টি সেঞ্চুরি। হয়েছেন টেস্টে দেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান।

ওয়ানডে ক্রিকেটেও ২০১১ সালের শুরু থেকে চল্লিশের ওপর গড়ে রান করেছেন মুশফিক। এ সময়ে খেলা ১৮৭ ওয়ানডে ম্যাচে ৪২.৪৯ গড়ে ৬৩৩২ রান করেছেন তিনি। ক্যারিয়ারের ৯টি সেঞ্চুরির সবগুলোই এই সময়ে করেছেন মুশি।

দেশকে নেতৃত্বও দিয়েছেন মুশফিক। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর সাকিব আল হাসানের কাছে থেকে অধিনায়কত্ব চলে যায় মুশফিকের কাছে। তিন ফরম্যাটের অধিনায়কত্বই পান তিনি। তার অধীনে ২০১২ সালের এশিয়া কাপের ফাইনালেও ওঠে বাংলাদেশ। সে টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে হারিয়েছিল টাইগাররা। অধিনায়ক থাকাকালীন সময়েই ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকান তিনি।

তবে অধিনায়ক হিসেবে প্রত্যাশা পূরণে ধারাবাহিক ব্যর্থ হওয়ায় ২০১৪ সালে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব হারান তিনি। তবে টেস্টের নেতৃত্ব ২০১৮ সাল পর্যন্ত তার হাতেই ছিল। অধিনায়ক হিসেবে ৩৪ টেস্টে ৭টি জয় এনে দিয়েছেন বাংলাদেশকে। এছাড়া তার সময়ে ৯টি টেস্টে ড্রও করেছে টাইগাররা। বাকি ১৮ টেস্টেই দেখেছে হারের মুখ। ২০২৪ পর্যন্ত ৩৭টি ওয়ানডে ও ২৩টি টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে যথাক্রমে ১১টি ও ৮টি ম্যাচে জয় এনে দিয়েছেন মুশফিক।

২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এই ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন মুশফিক। তখন থেকে বাকি দুই ফরম্যাটে খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

১৯৮৭ সালের ৯ মে বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন মুশফিক। আজ আটত্রিশে পা দিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই খেলোয়াড়। তর্কসাপেক্ষে তিনিই দেশের সবচেয়ে টেকনিক্যালি সাউন্ড ব্যাটার। জন্মদিনে মুশফিককে শুভেচ্ছা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat