১০ বছর প্রতীক্ষার পর স্বপ্নপূরণ হতে যাচ্ছে প্রেমিক যুগলের। অবশেষে প্রেমের জীবন শেষে বিয়ের মাধ্যমে মিলন ঘটতে যাচ্ছে তাদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে এসে প্রেম হয় গোপালগঞ্জের সানজিদা হোসাইন তৃমার। দূরত্ব আর নদীপথের কষ্টসাধ্য যাতায়াতের কারণে প্রেমিক ঢাকার সাভারের হাসান মাহমুদের পরিবারের বাধায় এই প্রেমিক যুগলের বিয়ে হয়নি। এজন্য ১০ বছর অপেক্ষা করেছেন পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রত্যাশায়।
অবশেষে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্মাণ হয়েছে সেই স্বপ্নের পদ্মা সেতু। ২৫ জুন জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন হবে সেই স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এজন্য পদ্মা সেতুর দুইপাড়ের মানুষসহ পুরো দেশবাসীর মাঝে বইছে উৎসবের আমেজ। সেই সঙ্গে স্বপ্নপূরণ হতে যাচ্ছে এই পাগল প্রেমিক যুগলেরও।
এদিনটিকে নিজেদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে স্মরণীয় করে রাখতে এই প্রেমিক যুগল পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের দিনেই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সবকিছু চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ওই প্রেমিক যুগল।
এই প্রেমিক যুগলের বিয়ের দাওয়াতপত্রও বানানো হয়েছে হুবহু পদ্মা সেতুর ডিজাইনে। হাসান-তৃমার দুই পরিবারের মধ্যেই চলছে বিয়ের ব্যাপক প্রস্তুতি। পদ্মা সেতু হয়েই কনের বাড়িতে যাবে বরযাত্রীর গাড়িবহর।
প্রেমিক হাসান মাহমুদ সাভার পৌরশহরের বাসিন্দা। আর প্রেমিকা গোপালগঞ্জ সদরের বাসিন্দা। হাসান মাহমুদ শিল্পকলা একাডেমির জনসংযোগ কর্মকর্তা ও সানজিদা হোসাইন তৃমা একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।
উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হলেও সম্পূর্ণ দেশীয় রীতিনীতি মেনেই অনুষ্ঠিত হবে তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান। ১৭ জুন হাসান মাহমুদের গায়েহলুদ সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৪ জুন অনুষ্ঠিত হয় সানজিদা হোসাইন তৃমার গায়েহলুদের অনুষ্ঠান। ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনেই বরযাত্রীর গাড়িবহর যাবে কনের বাড়িতে। ১ জুলাই সাভার পৌর কমিউনিটি সেন্টারে বিবাহোত্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন যেমন দেশবাসীর দৃষ্টি কেড়েছে তেমনি উদ্বোধনের দিনেই এই প্রেমিক প্রেমিকার এমন সিদ্ধান্তও দেশবাসীর নজর কেড়েছে। এই প্রেমিক যুগল স্বপ্নের এ সেতু নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এমনকি তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে পাটুরিয়া দৌলতদিয়া পয়েন্টে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের অনুরোধ করেছেন।
প্রেমিকা সানজিদা হোসাইন তৃমা বলেন, ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে হাসান মাহমুদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। একপর্যায়ে এ বন্ধুত্বের সম্পর্ক প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নেই বিয়ে করার। নদীপথে কষ্টসাধ্য যাতায়াত আর দূরত্বের কথা ভেবে হাসানের পরিবার বিয়েতে বাধা দেয়। ফলে আমাদের ১০ বছর অপেক্ষা করতে হয় এ দিনটির জন্য। আমরা সিদ্ধান্ত নেই কখনো পদ্মা সেতু নির্মাণ হলে আমরা বিয়ে করব।
প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের মনের আশা পূরণ করেছেন। আজ পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে। তাই এ দিনটিকে চিরস্মরণীয় ও বরণীয় করে রাখতেই আমরা উদ্বোধনের দিনেই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আমার প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমি তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
হাসান মাহমুদ বলেন, শুধুমাত্র নদীপথের কষ্টসাধ্য যাতায়াত ও অধিক দূরত্বের কারণে আমার পরিবারের লোকজন আমাদের বিয়েতে মত দেননি। এজন্য আমাদের এ দিনটির জন্য দীর্ঘ ১০ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় আজ আমাদের স্বপ্নপূরণ হয়েছে। এজন্যই আমরা পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনেই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি পরিবারের মতামতেই। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। দেশবাসীর কাছে আবেদন আমাদের জন্যও দোয়া করবেন।
এ জাতীয় আরো খবর..