×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৫-১৭
  • ১০৩ বার পঠিত
গতকাল এক দিনেই ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে গেছে ৮০ পয়সা। আর গত ২০ দিনে তিন দফায় ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন হলো এক টাকা ৩০ পয়সা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আমদানি ব্যয় পরিশোধের চাপে দেশে মার্কিন ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। কিন্তু সেই হারে বাজারে সরবরাহ না বাড়ায় বাড়ছে ডলারের দাম।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বাজারে ছেড়েও দামের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে পারছে না।
গতকাল সোমবার আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা। এক দিন আগেও এক ডলারে লেগেছিল ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা। আর গত ১০ মে ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা এবং ২৭ এপ্রিল ছিল ৮৬ টাকা ২০ পয়সা।

ব্যাংকগুলো নগদ ডলার বিক্রি করছে এর চেয়ে পাঁচ থেকে ৭ টাকা বেশি দরে। ব্যাংকের বাইরে খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলার কেনাবেচা হচ্ছে ৯২ থেকে ৯৭ টাকায়।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দেশে ব্যাপক হারে আমদানির চাপ বেড়েছে। ফলে আমদানির ব্যয় পরিশোধে বাড়তি ডলার লাগছে। কিন্তু সে তুলনায় রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়েনি। ফলে ব্যাংকব্যবস্থা ও খোলাবাজারে মার্কিন ডলারের ওপর চাপ বাড়ছে, যার কারণে টাকার বিপরীতে বাড়ছে ডলারের দাম। বাজার স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোর চাহিদার বিপরীতে ডলার বিক্রি করছে। কিন্তু তার পরও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানি বেশি, এ কারণে ডলারের ওপর চাপ পড়েছে। বাজার বিবেচনা করে ডলারের রেট ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। ’ তিনি জানান, ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার সরবরাহ করছে। এখন পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর চাহিদার বিপরীতে ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করা হয়েছে। যখনই প্রয়োজন হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার সরবরাহ করছে।

সিরাজুল ইসলাম আশার কথাও শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের রপ্তানি বাড়ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য ছাড়া অন্যান্য পণ্যের আমদানিতে গড় মার্জিনসহ আমরা বিভিন্ন বিধি-নিষেধ দিয়েছি। আশা করছি শিগগিরই বাজার স্থিতিশীল হয়ে যাবে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্ত ব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়। এখন পর্যন্ত এ অবস্থা চলছে।

২০২১ সালের ৩ আগস্ট থেকে দু-এক পয়সা করে বেড়ে গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতো ৮৫ টাকা ছাড়ায় ডলারের দাম। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি বেড়ে ৮৬ টাকা হয়। আন্ত ব্যাংক লেনদেনে গত ২৩ মার্চ ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় দাঁড়ায়। ২৭ এপ্রিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা, ১০ মে ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা এবং গতকাল ১৬ মে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সায় দাঁড়ায় ডলারের মূল্য। অর্থাৎ ৯ মাসের ব্যবধানে প্রতি ডলারের দর বেড়েছে দুই টাকা ৭০ পয়সা।

এদিকে আমদানির চাপে ধারাবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করায় বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের (রিজার্ভ) ওপর চাপ বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ২৪ আগস্ট রিজার্ভ আগের সব রেকর্ড ভেঙে ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছিল। গত ১১ মে রিজার্ভ ৪১.৯৩ বিলিয়নে নেমে এসেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat