স্টাফ রিপোর্টার : অভিনেত্রী শিমুর স্বামী নোবেল ও তার বাল্যবন্ধু ফরহাদ মিলে রাইমা ইসলাম শিমুকে তার বেড রুমে গলাটিপে হত্যা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই দুজনের দেওয়া জবানবন্দির ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার দুপুরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানান ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, দাম্পত্য কলহের কারণে স্বামী নোবেল ও তার বন্ধু ফরহাদ মিলে নিজ বাসায় গলাটিপে হত্যা করেন শিমুকে। এদিকে বৃহস্পতিবার ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে শিমুর হত্যার দায় স্বীকার করে নোবেল ও ফরহাদ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এর পর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। বর্তমানে আসামিরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে হুমায়ুন কবির বলেন, ১৬ জানুয়ারি সকালে নোবেলের গ্রিণ রোডের বাসায় হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। ঘটনার কিছু সময় আগে সেখানে উপস্থিত হন ফরহাদ। ফরহাদ নোবেলের বাল্যবন্ধু। প্রায় ৪০ বছরের সম্পর্ক তাদের। ফরহাদ ছিল বেকার। মাঝে মধ্যে সে নোবেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলত। ১৬ জানুয়ারি সকালে দুই হাজার টাকা ধার নিতে ফরহাদ নোবেলের বাসায় যায়। এ সময় তাকে চা দেন শিমু। ফরহাদ ড্রয়িং রুমে বসে চা খাচ্ছিল। এরই মধ্যে পাশের বেডরুমে নোবেল ও শিমুর মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। দুজনই উচ্চবাচ্য করতে থাকেন। হইচই শুনে ফরহাদ ড্রয়িং রুম থেকে শিমুর বেডরুমে যায়। এ সময় মেজাজ হারিয়ে শিমুকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় নোবেল। সেখানে ফরহাদ হাজির হলে নোবেল তাকে সহায়তা করতে বলে। ফরহাদ ছিল নোবেলের বাধ্যগত। এ জন্য সে নোবেলের কথামতো শিমুকে চেপে ধরে। এর পর দুজন মিলে গলাটিপে হত্যা করে শিমুকে। পুলিশ সুপার জানান, হত্যার পর লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে শিমুর ব্যবহৃত গাড়িতে মরদেহ তোলা হয়। এরপর সেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে নোবেল ও ফরহাদ। সারা দিন ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেও গাড়ি থেকে লাশ ফেলার সুযোগ পায়নি। পরে তারা আবার গ্রিণ রোডের বাসায় চলে আসে। এর পর সন্ধ্যায় আবার গাড়ি নিয়ে বের হয়। ঘুরতে ঘুরতে রাত সাড়ে ৯টার দিকে কেরানীগঞ্জের হজরতপুরের আলীপুর ব্রিজের কাছে যায়। জায়গাটা নির্জন এবং লোকজনের উপস্থিতি না থাকায় সেখানে লাশ ফেলে তারা গাড়ি নিয়ে যান। পর দিন সকালে বস্তাবন্দি অবস্থায় অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই নারীর ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে জাতীয় তথ্যভাণ্ডারের সহায়তায় তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি আব্দুস ছালাম। ১৯৯৮ সালে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে শিমুর। পরের বছর দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, চাষী নজরুল ইসলাম, শরিফ উদ্দিন খান দিপুসহ আরও বেশ কিছু পরিচালকের প্রায় ২৫টি সিনেমায় পার্শ্বচরিত্রে দেখা যায় তাকে। শাকিব খান, অমিত হাসানসহ কয়েকজন তারকার সঙ্গেও কাজ করেছেন শিমু। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি কয়েকটি টিভি নাটকে অভিনয় এবং প্রযোজনায়ও করেন।
এ জাতীয় আরো খবর..