খালেদ মো. সাইফুল্লাহ, গোসাইরহাট, শরীয়তপুর : শরীয়তপুরের গোসাইরহাটের জয়ন্তি নদীর বালু ড্রেজিং করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। শীত মৌসুমে নাব্যতা সংকটের কারণে ঢাকা-ডামুড্যা রুটের লঞ্চগুলো চলাচল বিঘ্নিত হয়। মেঘনা নদীর মোহনা জয়ন্তি নদীর মুখ থেকে মূল নদী কোদালপুর- গোসাইরহাট-ডামুড্যা পর্যন্ত প্রস্থে কমবেশী ৩০০ ফুট, গভীরতা কোথাও কোথাও ৫-৭ ফুট। লঞ্চ চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে প্রস্থে ১২০ ফুট ও ১০ ফুট গভীরতা করে কোদালপুর-গোসাইরহাট-ডামুড্যা পর্যন্ত ডুবোচরগুলো কাটার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে ড্রেজিংকৃত মেঘনা নদীর মোহনা জয়ন্তি নদীর কোদালপুর অংশের বালু কুচাইপট্টি ইউনিয়নে ফেলা হয়। আর দাতরা-সাইক্ষা অংশের বালু ড্রেজিং মেশিন দ্বারা সাইক্ষা ব্রীজের পাশে ব্রীজের পূর্ব-উত্তর কোণে গোসাইরহাট ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপনের জমিতে রাখার কথা থাকলেও দাতরা-সাইক্ষা মৌজায় তার নিজ জমির পাশাপাশি গরীব কৃষকের জমিতে বালু ফেলা হচ্ছে। বালুগুলো স্তুপ আকারে ৬ একর জমির উপর ফেলা হচ্ছে। স্তুপ আকারে ফেলা বালুগুলোর অবশিষ্ট পানি দ্বারা বাঁধ ভেঙে পাশের ফসলী জমিতে গিয়ে পড়ার ফলে ২০ একর জমির রবি শস্য পেঁয়াজ, রসুন, কালো জিরা, ধনিয়া, খেসারী, মুশুর ডাল বিনষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। অভিযোগ আছে বিক্রি ও নিজে জলাশয় ভরাট করে বাড়ী করার উদ্দেশ্যে নব র্নিাচিত গোসাইরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন, ওই ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক মিলন সরকার, আনিছ মোল্লা সিন্ডিকেট করে নদীর বালুগুলো স্তুপ করে রেখে সাধারণ কৃষকদের ক্ষতি করছে। ভুক্তভোগী মরুমিয়া ও শাজাহান মাদবর ও স্থানীয়রা জানায়, শীত মৌসুমে নাব্যতা সংকটের কারণে ঢাকা-ডামুড্যা রুটের লঞ্চগুলো চলাচল বিঘ্নিত হয়। সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগী কৃষক ইছব আলী মাদবর বলেন, আমার এই বিলে (দাতরা-সাইক্ষা) ১২একর জমি আছে, আমার জমিতে ধুলোটি (রবি শস্য) ফসল বালু ফেলার কারনে বাধ ভেঙে বালুর পলি পড়ার কারণে আমার ফসলগুলো শেষ করে দিয়েছে সাথে আমার স্বপ্ন। মাত্র ভোট দিলাম, চেয়ারম্যান বানালাম, আমার জমিতে বালু না ফেলার জন্য কত কাকতি মিনতি করলাম আমাদের কথা শুনলোনা। জোর করে আমার জমিতে বালু ফেলায় বাধ ভেঙে আমার ৬-৭ লক্ষ টাকার শস্য নষ্ট হয়ে গেছে। চাঁদপুর জোনের বিআইডব্লিউটএর সহকারী প্রকৌশলী মো. হোসেন বলেন, মেঘনা নদীর মোহনা জয়ন্তি নদীর মুখ থেকে কোদালপুর-গোসাইরহাট-ডামুড্যা পর্যন্ত প্রস্থে কমবেশী ৩০০ ফুট, গভীরতা কোথাও কোথাও ৫-৭ ফুট। লঞ্চ চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে প্রস্থে ১২০ ফুট ও ১০ ফুট গভীরতা করে কোদালপুর-গোসাইরহাট-ডামুড্যা পর্যন্ত ডুবোচরগুলো কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বালু নদীতে না ফেলে চেয়ারম্যানের জায়গায় ফেলছে। গোসাইরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন মুঠোফোনে বলেন, আমি এমপি মহোদয়ের অনুষ্ঠানের কারণে ঢাকায় আছি। বালুর স্তুপ করার কারণে বাধ ভেঙে কিছু জায়গার ফসল নষ্ট হয়েছে। আমি ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেব।
এ জাতীয় আরো খবর..