পশুখাদ্যের উচ্চমূল্যের কারণে বর্তমানে প্রতি কেজি দুধ উৎপাদনে খরচ পড়ছে প্রায় ৫০ টাকা। কিন্তু খামারিদের এই দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা দরে। আর দেশের ডেইরি শিল্পের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো আমদানীকৃত গুঁড়া দুধের সঙ্গে অসম প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশ ডেইরি ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (বিডিডিএফ) বলছে, এই পরিস্থিতিতে দেশের প্রায় ১০ লাখ ছোট-বড় প্রান্তিক খামার হুমকির মুখে পড়েছে।
বিডিডিএফের সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন সুলতানা কালের কণ্ঠকে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে পশুখাদ্যের দাম কয়েক গুণ বেড়েছে। আমদানি করা গুঁড়া দুধে ভর্তুকি দেওয়া হয় বলে দাম কমে যায়। এই অবস্থায় দেশের স্থানীয় দুধ উৎপাদনকারীরা প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিডিডিএফ সূত্র জানায়, এরই মধ্যে গুঁড়া দুধে পানি মিশিয়ে (রিকনস্টিটিউশন) তা প্যাকেজিং এবং বাজারজাতকরণের অনুমতি দিয়েছে বিএসটিআই, যা দেশের খামারিদের জন্য দুর্বিষহ করে তুলবে।
পারভীন সুলতানা কালের কণ্ঠকে আরো বলেন, দেশের ডেইরি খাত বাঁচানোর জন্য অবিলম্ব্বে পশুখাদ্যের মূল্যহ্রাস এবং বিএসটিআইয়ের আইন পরিবর্তন করতে হবে। দেশের ডেইরি সেক্টরের উন্নয়নের জন্য দেশীয় পণ্যকে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতাপূর্ণ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে খামারের উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় ডেইরি পণ্যের উৎপাদন খরচও বেশি হয়। ফলে জাতীয় বাজারে ডেইরি পণ্য ভোক্তাবান্ধব না হওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে তা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে না। এ ক্ষেত্রে দেশে উৎপাদিত সব ডেইরি পণ্যের ওপর থেকে মূল্য সংযোজন কর এবং শুল্ক প্রত্যাহার করা প্রয়োজন।
বিডিডিএফ বলছে, দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকারী কম্পানিগুলো তাদের পণ্যের বিক্রয় মূল্য বাড়ালেও ক্রয় মূল্যের সঙ্গে তা সমন্বয় করেনি। এ অবস্থায় খামারিদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে এবং বেশির ভাগ খামার বন্ধের উপক্রম হয়ে পড়েছে। এসব খামার বন্ধ হলে দেশে লাখ লাখ যুবক ও নারী খামারি বেকার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পশুখাদ্য আমদানিতে সব শর্ত শিথিল করে এবং পশুখাদ্যে ভর্তুকি দেওয়ার দাবি তুলেছে।
বিডিডিএফের ভাইস প্রেসিডেন্ট উজমা চৌধুরী বলেন, ‘দেশের দুগ্ধ খামারিদের নিয়ে আমাদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে চলমান প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সভায় বিএসটিআইয়ের নতুন আইন বাতিলের আহ্বান জানানো হয়েছে। ’
এ জাতীয় আরো খবর..