রাজধানীর উত্তরা এলাকায় প্রাইভেট কারে বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ে শিশুসহ নিহত পাঁচজনের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা হয়েছে। তবে এজাহারে কারো নাম উল্লেখ না করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলায় ঘটনাটি ঘটে বলে দাবি করা হয়।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ মর্গ থেকে নিহত পাঁচজনের মরদেহ নিয়ে যান স্বজনরা।
তাদের মধ্যে ফাহিমা আক্তার (৩৮), তার বোন ঝরনা আক্তার (২৭) এবং ঝরনার দুই সন্তান জান্নাতুল (৬) ও জাকারিয়ার (৪) মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাদের গ্রামের বাড়ি জামালপুরের মেলান্দহে।
এদিকে নিহত আইয়ুব আলী হোসেন রুবেলের (৫৫) স্ত্রী দাবি করে মর্গে উপস্থিত হন পাঁচ নারী। এ ছাড়া আরো এক স্ত্রীর সন্তান রুবেলকে বাবা দাবি করছেন। তিনিও হাসপাতালে উপস্থিত হয়েছেন। তবে রুবেলের মরদেহ গ্রহণ করেন তার স্ত্রী শাহিদা খানম।
আইয়ুব আলীর ভাই মো. ইয়াহিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, মরদেহ প্রথমে মানিকগঞ্জের সিংগাইরে শাহিদার গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে। সেখানে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মরদেহ নেওয়া হবে তাদের গ্রামের বাড়ি মেহেরপুর সদরের ঘোড়ামারা রাজনগরে। সেখানেই আইয়ুব আলীকে দাফন করা হবে।
উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত চলছে। ক্রেন চালককে গ্রেপ্তার করতে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অভিযান চলছে।
র্যাব ক্রেন চালককে গ্রেপ্তার করেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাকে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে কি না আমার জানা নেই। তবে শিগগিরই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। ’
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন কালের কণ্ঠকে বলেন, তাকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে তাকে গ্রেপ্তার করতে সম্ভাব্য কয়েকটি এলাকায় অভিযান অব্যাহত আছে।
এজাহারে মামলার বাদী আফরান মণ্ডল বাবু বলেন, ‘উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার পড়ে প্রাইভেট কারে স্বজন নিহতের ঘটনার আগে সেখানে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আমার আত্মীয়-স্বজনরা মারা যায়। ’
রুবেলের মরদেহ নিয়ে ‘টানাটানি’
নিহত রুবেল হাসানের সাতটি বিয়ে করেছেন বলে জানা গেছে। রুবেলের স্ত্রী দাবি করে গতকাল সোহরাওয়ার্দী মর্গে আসেন সালমা আক্তার পুতুল, নারগিস বেগম, রেহেনা বেগম, শাহিদা বেগম ও তাসলিমা আক্তার লতা। তাদের মধ্যে শাহিদার বাড়ি মানিকগঞ্জে। লতা গাজীপুরের। পুতুল মিরপুর ১০-এর। আর নারগিস ঢাকার দোহারের। এই পাঁচজনই মর্গের সামনে এসে মরদেহ দাবি করছেন। আরেকজনের নাম লিপি। তিনি মারা গেছেন। এ ছাড়া বাকি একজনের নাম জানা যায়নি।
এ জাতীয় আরো খবর..