সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন অভিনেত্রী অ্যান হেচ। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালেও নেওয়া হয়। শরীরের বেশির ভাগ অংশই পুড়ে গিয়েছিল। অবস্থা সংকটাপন্ন থাকায় চিকিৎসকেরা আগেই বলে দিয়েছিলেন, এ যাত্রাই হতে পারে শেষ যাত্রা। পরিবারের লোকেরাও আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। ছয় দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে সেই অ্যান হেচের আর ফেরা হলো না। সন্তান, শুভাকাঙ্ক্ষীদের ছেড়ে তিনি গতকাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ভ্যারাইটি।
অ্যান হেচের ছেলে হোমার ল্যাফোন মায়ের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন। তাঁর মা দুর্ঘটনা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর প্রতিটা দিনই ছিল তাঁদের জন্য দুর্বিষহ। হোমার বিবৃতিতে বলেন, ‘আটলাস ও আমি মাকে হারালাম। মায়ের দুর্ঘটনার পর গত ছয় দিন মানসিকভাবে অবিশ্বাস্য এক দোলাচলের মধ্যে ছিলাম। কখনো গভীর শোকে ছিলাম, কখনো বাকরুদ্ধ হয়ে ছিলাম। এখন মায়ের সব কষ্ট দূর হয়েছে। মা এখন চিরশান্তিতে ঘুমিয়ে আছেন। এই ছয় দিন বন্ধু, পরিবারের লোক ও ভক্তরা হৃদয় দিয়ে আমাদের পাশে ছিলেন। আমি তাঁদের ভালোবাসার জন্য কৃতজ্ঞতা। মা শান্তিতে ঘুমাও। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। তোমার হোমার।’
অ্যান হেচের মৃত্যুতে তাঁর পরিবারের বন্ধুরা বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘আজ আমরা উজ্জ্বল নক্ষত্র হারালাম। একজন মহৎ, প্রাণবন্ত আত্মাকে হারালাম। যে একজন মা, একই সঙ্গে বিশ্বস্ত বন্ধু। অ্যান, তুমি আমাদের মনের গভীর থেকে যাবে। আমরা তোমার শূন্যতা অনুভব করব। তুমি তোমার ছেলেদের মধ্যে বেঁচে থাকবে। তুমি তোমার শৈল্পিক কাজ, সত্যের পক্ষে সর্বদাই দাঁড়ানোর সাহসিকতা, ভালোবাসার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া মাধ্যমে আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবে।’
৫ আগস্ট স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন অ্যান হেচ। তাঁর গাড়ি মার ভিস্তা এলাকার একটি বাড়িতে ধাক্কা মারার পর আগুন ধরে যায়। অভিনেত্রীকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখনই জানা যায়, দুর্ঘটনা অভিনেত্রীর শরীরের বেশির ভাগ অংশই পুড়ে গিয়েছে। চিকিৎসকেরা তখন জানিয়েছিলেন, ৫৩ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী মস্তিষ্কে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। অঙ্গ দান করা যাবে কি না, সেটা ঠিক করতেই লাইফ সাপোর্ট দিয়ে অভিনেত্রীকে বাঁচিয়ে রাখা হয়।
‘দ্য ব্রেভ’, ‘শিকাগো পিডি’র মতো একাধিক টেলিভিশন সিরিজে দেখা মিলেছে অ্যান হেচের। জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘অ্যানাদার ওয়ার্ল্ড’ দিয়ে হলিউডে নিজের জায়গা পাকা করেন অভিনেত্রী। এটি দিয়ে জিতেছিলেন ডেটাইম এমি পুরস্কারও। এ ছাড়া ‘সিক্স ডেজ সেভেন নাইটস’, ‘ওয়াগ দ্য ডগ’-এর মতো ছবির পরিচিত মুখ তিনি। থ্রিলার টিভি সিরিজ ‘কোয়ান্টিকো’ দিয়ে প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার হলিউড-যাত্রা শুরু হয়েছিল। তাঁর সঙ্গে সেই সিরিজে অভিনয় করেন মার্কিন অভিনেত্রী অ্যান হেচও। এ অভিনেত্রী ১৯৮৭ সালে ‘অ্যানাদার ওয়ার্ল্ড’ দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন। তাঁর জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওতে ১৯৬৯ সালের ২৫ মে। ‘হোয়াট রিমেইনস’, ‘ফুল রাইড’, ‘সুপারকল’, ‘দ্য আইডল’সহ তাঁর একাধিক টেলিভিশন সিরিজ ও সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
এ জাতীয় আরো খবর..