সরকার পতনে সাত দলের সমন্বয়ে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ নামের নতুন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব এই জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দলগুলো হলো জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণ-অধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। এই সাত দলের সবাই বিএনপির মিত্র দল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
জোটের ঘোষণা দিয়ে আ স ম রব বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জনগণের আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে ইতিহাসের অনিবার্য প্রয়োজনে গণতন্ত্র মঞ্চ আত্মপ্রকাশ করছে। স্বৈরাচারী সরকারের পতন, রাষ্ট্রব্যবস্থার বদল, শাসনব্যবস্থা ও সাংবিধানিক সংস্কার, রাষ্ট্র মেরামতের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে এই মঞ্চে করা হয়েছে।
রব বলেন, বর্তমান সরকার রাষ্ট্রকে আইনগত ও নৈতিকভাবে ধ্বংস করে ফেলেছে। অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজের ভিত্তি উচ্ছেদ করে দিয়েছে। তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। জনগণ এত উত্তেজিত ও ক্ষিপ্ত হয়ে আছে তখন তারা পালাবার রাস্তা পাবে না।
২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে অক্টোবরে গণফোরামের ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে জেএনডি, গণফোরাম, নাগরিক ঐক্যসহ কয়েকটি দল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিল। পরে নির্বাচনের পর ওই ফ্রন্ট ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এবার সরকারবিরোধী আন্দোলনে একটা বৃহত্তর প্ল্যাটফর্ম গড়ার লক্ষ্য নিয়ে জুন মাস থেকে বিএনপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে।
সংবাদ সম্মেলনে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’-এর রূপরেখা উপস্থাপন করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
গণতন্ত্র মঞ্চের লক্ষ্য :
সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করতে হবে এবং একটি রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, প্রশাসনিক রদবদল, একজন নাগরিকের নির্বাচিত করার ও নির্বাচিত হওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে দল নিবন্ধন আইন, নির্বাচন আইন ও বিধিমালার যথাযথ সংস্কার করবে এবং ইভিএম ব্যবস্থা বাতিল করে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামো ও প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক ও শাসনতান্ত্রিক সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরিতে সহায়তা করবে, যাতে পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ এই গণতান্ত্রিক সংস্কার সম্পন্ন করতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণ-অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া, সদস্যসচিব নুরুল হক নুর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ জাতীয় আরো খবর..