সদ্যঃপ্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া স্মরণে শোকসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার বিকেলে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের উল্ল্যা সোনাতলা গার্লস হাই স্কুল মাঠে এই শোকসভা হয়।
জাতীয় শোক দিবস ও ফজলে রাব্বী মিয়া স্মরণে এই শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে জনতার স্রোত দেখা যায়।
অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া ছিলেন উত্তর জনপদের কিংবদন্তি নেতা।
সাঘাটা-ফুলছড়ির আপামর জনসাধারণ তাঁকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান। শোকসভায় প্রধান আকর্ষণ ছিলেন কিংবদন্তি নেতার উত্তরাধিকার ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারজানা রাব্বী বুবলী, যার মধ্যে আছে ফজলে রাব্বীর প্রতিচ্ছবি।
এলাকাবাসীর আয়োজনে এই সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা জজ কোর্টের সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম শফি। এ সময় বক্তব্য দেন ফারজানা রাব্বী বুবলী, ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, কঞ্চিপাড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ এ টি এম রাসেদুজ্জামান রোকন, জি এস এম আলমগীরসহ অন্যরা। অনুষ্ঠানে প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার স্মৃতিচারণা করা হয়।
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া গত ২৩ জুলাই ভোররাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ঢাকায় ও গাইবান্ধায় জানাজা শেষে ২৫ জুলাই সাঘাটা উপজেলার গটিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে স্ত্রী ও অকালপ্রয়াত দুই ছেলের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়। জানাজায় শোকার্ত হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত ছিল।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৪৬ সালের ১৫ এপ্রিল গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার গটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম ফয়জার রহমান ও মায়ের নাম হামিদুন নেছা। ছাত্রজীবনেই তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হন। তিনি ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম এবং ২০১৯ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৯ সালে তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পঞ্চম ও সপ্তম সংসদে তিনি বিরোধীদলীয় হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আর দশম সংসদ থেকে তিনি ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
২০২১ সালের জুন মাসে পেটের টিউমার অপারেশন করান ডেপুটি স্পিকার। এর পর থেকে তাঁর শরীরে নানা জটিলতা দেখা দেয়। পরে ওই বছরের আগস্ট মাসে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ভারত নেওয়া হয়। কিন্তু সুস্থ না হওয়ায় সেখান থেকে ফিরে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তিনি তিন কন্যা এবং অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
এ জাতীয় আরো খবর..