পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর লঞ্চের যাত্রী চলাচল কমে এসেছে। আগে গড়ে প্রতিদিন রাজধানীর সদরঘাট থেকে ৬৫টি লঞ্চ ছেড়ে যেত, সেতু চালু হওয়ার পর তা ৫০টির নিচে নেমে এসেছে। যাত্রী পেতে ঢাকা-বরিশাল নৌপথে লঞ্চের ভাড়াও কমানো হয়েছে। তবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় নতুন সমীকরণে পড়েছেন লঞ্চ মালিকরা।
তেলের দাম বাড়ায় লোকসান এড়াতে বাড়াতে হবে ভাড়া, অন্যদিকে বাড়তি ভাড়ায় যাত্রী মিলবে কি না, তা নিয়েও রয়েছে শঙ্কা।
জ্বালানি তেলের দাম ৪২ শতাংশ বাড়ায় লঞ্চের ভাড়া ১০০ শতাংশ বাড়াতে চান লঞ্চ মালিকরা। এরই মধ্যে লঞ্চ মালিকদের পক্ষ থেকে ভাড়া দ্বিগুণ করার প্রস্তাব জানিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডাব্লিউটিএ) চিঠি দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে বিআইডাব্লিউটিএ ও লঞ্চ মালিকদের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘জ্বালানিসহ অন্যান্য খরচ যেভাবে বেড়েছে, তাতে ভাড়া দ্বিগুণ করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। আমরা ১০০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছি। ’
এর আগে গত বছরের অক্টোবরে ডিজেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানোর বিপরীতে লঞ্চের ভাড়া ৩৫ শতাংশ বাড়ানো হয়। তখন ভাড়া বাড়ার আগে লঞ্চে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে দূরত্বে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া ছিল ১.৭০ টাকা, যেটা বেড়ে দাঁড়ায় ২.৩০ টাকা। দ্বিগুণ হলে প্রতি কিলোমিটারে এই ভাড়া হবে ৪.৬০ টাকা। ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া নভেম্বরের আগে ছিল ১.৪০ টাকা, সেটা বেড়ে হয়েছিল দুই টাকা। এখন এই ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে চার টাকা করার প্রস্তাব উঠেছে। ভাড়া দ্বিগুণ করা হলে সর্বনিম্ন ৩০০ টাকার ডেকের ভাড়া ৬০০ টাকায় গিয়ে ঠেকবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার সূত্র বলছে, স্বাভাবিক সময়ে লঞ্চ চলাচল কমেছে প্রায় ২০টি। আগে যেখানে ঢাকা থেকে নিয়মিত ২০ থেকে ২৫ হাজার যাত্রী লঞ্চে পাওয়া যেত, এখন তা ১০ থেকে ১৫ হাজারে নেমে এসেছে। ঈদের পরের এমন সময়ে লঞ্চের যাত্রী আরো কম থাকে।
যাত্রীসংকটের এই অবস্থায় দ্বিগুণ ভাড়ায় যাত্রী আরো কতটা কমবে—এমন প্রশ্নে লঞ্চ মালিকরা কেউ সরাসরি কথা বলতে চাননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার এক নেতা কালের কণ্ঠকে বলেন, এটা ব্যবসার একটা কৌশল। ভাড়া দ্বিগুণ হারে বাড়ানো হলেও যাত্রীদের কাছ থেকে সেটা এখনই আদায় করা হবে না।
এ জাতীয় আরো খবর..