×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৮-০৭
  • ৬৪ বার পঠিত
দুই দশক আগের চট্টগ্রামে আলোচিত ব্যবসায়ী জানে আলম হত্যা মামলায় সাত বছর আগে খালাস পেলেও আবুল কাশেমকে এখনো কেন কনডেম সেলে রাখা হয়েছে, তা জানতে বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রাব্বানীকে অনুসন্ধান করে আগামী ২৫ অগাস্টের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রবিবার রুলসহ এ আদেশ দেন। হাইকোর্টের রায়ে খালাস পাওয়া আবুল কাশেমকে কনডেম সেল থেকে মুক্তি দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।

আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টের খালাসের আদেশ কারাগারে না পৌঁছানোয় এখন পর্যন্ত এই ব্যক্তি কনডেম সেলে আছেন। কী কারণে, কার অবহেলায় এমনটা হয়েছে সেটিই অনুসন্ধান করতে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ২৫ অগাস্টের মধ্যে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এ মামলায় দণ্ডিত দুইজন গত জুনে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন বলে জানিয়েছেন এ আইনজীবী।

২০০২ সালের ৩০ মার্চ সকালে লোহাগাড়ায় আলোচিত ব্যবসায়ী জানে আলমকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির বড় ছেলে তজবিরুল আলম বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানায় ২১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় আসামি করা হয় আবুল কাশেমকে।

২০০৭ সালের ২৪ জুলাই চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আবুল কাশেমসহ ১২ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ৮ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। রায়ের সময় আবুল কাশেম পলাতক ছিলেন। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আপিল করেন। আপিলে সৈয়দ আহমেদসহ ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ২ জনকে যাবজ্জীবন ও বাকিদের খালাস দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে দণ্ডিতরা আপিল করেন। পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের আবেদন) আসে হাইকোর্ট। এই ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানির পর ২০১৩ সালে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ২ জনকে যাবজ্জীবন ও বাকিদের খালাস দেওয়া হয়। কিন্তু করণিক ত্রটির কারণে হাইকোর্টের রায়ের কার্য কর অংশে পলাতক খালাস প্রাপ্ত পলাতকদের নাম বাদ পড়ে। তখনও আবুল কাশেম পলাতক। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সংমোধন করে রায়ের সে ত্রুটি দুর করা হয়। সংশোধীত সে রায়ে পলাতক খালাস প্রাপ্তদের মধ্যে আবুল কাশেমেরও নাম আসে। তার আগে ২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল অন্য একটি মামলায় চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজিরা দিতে গেলে জানে আলম হত্যা মামলায় আবুল কাশেমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেই থেকে আবুল কাশেম চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে আছেন।

এ নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ করে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজ। প্রকাশিত প্রতিবেদন গত ৪ আগস্ট আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। ওই দিনই আবুল কাশের মুক্তির নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেন তিনি। রবিবার আবুল কাশেমের ছেলে আরেকটি আবেদন করেন। এসব আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর আদেশ দেন উচ্চ আদালত।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী কালের কণ্ঠকে বলেন, “হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কোনো পক্ষ আপিল করেননি। ফলে হাইকোর্টের রায়ের পর এতদিনে এই ব্যক্তির মুক্তি পেয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল। ”

এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত সৈয়দ আহমেদকে গত ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। গত ২০ বছর কখনো উদ্বাস্তু, কখনো বাবুর্চি, কখনোবা নিরাপত্তাকর্মীর ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat