'প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া ছাত্র জীবন থেকেই দেশ ও জনগণের জন্য লড়াই শুরু করেছিলেন। কর্মজীবনে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। কর্মগুণে তিনি জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। জনগণ শ্রদ্ধার সঙ্গে অনন্তকাল তাঁকে স্মরণ করবে'।
আজ রবিবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাস আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে বিশিষ্টজনা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংসদীয় ককাসের সভাপতি মো. শামসুল হক টুকু।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী। বক্তৃতা করেন জাতীয় সংসদের হুইপ মাহবুব আরা বেগম গিনি, সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারি, রেজাউল করিম বাবলু, খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন, অপরাজিতা হক ও জাকিয়া তাবাসসুম, সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম, সংসদ সচিবালয়ের পরিচালক (গণসংযোগ) লাবণ্য আহমেদ, ডেপুটি স্পিকারের একান্ত সচিব আব্দুল মালেক, ফজলে রাব্বী মিয়ার কন্যা ফারহানা রাব্বী রিপা, সাংবাদিক নিখিল ভদ্র, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, সুইড বাংলাদেশের জাওয়াহেতুল ইমলাম মামুন, স্কাস চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা, এসকেএস’র সমন্বয়কারী আশরাফুল আলম প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে ফজলে রাব্বী মিয়ার কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে চিফ হুইপ নূর-এ আলম চৌধুরী বলেন, শোকের মাসে জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হারানোর শোকের সাথে ফজলে রাব্বী মিয়াকে হারানোর শোক জাতিকে আরো বেদনাতুর করে তুলেছে। জাতির পিতাকে হারানোর পর দেশের রাজনীতিতে অনেক বড় শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। ফজলে রাব্বী মিয়ার মতো বিজ্ঞ সংসদ সদস্যকে হারিয়ে সেই শূন্যতা আরো বড় হলো।
তিনি আরো বলেন, দেশ, জনগণ, শিশু ও নিজ দায়িত্বের প্রতি তাঁর যে ভালোবাসা আমরা লক্ষ্য করেছি তা অবিস্মরণীয়। পরিবারের শত প্রতিকূলতার মাঝেও তিনি কখনো দায়িত্ব এড়িয়ে চলেননি। বরং বাংলাদেশের রাজনীতিতে জনগণের প্রতি তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ।
হুইপ মাহবুব আরা গিনি বলেন, জনগণের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাই তাঁর জীবনে সবচেয়ে বড় অর্জন। যেকোনো দায়িত্ব পালনে তিনি আন্তরিক ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে তিনি ছিলেন কঠোর ও কঠিন। আবার সাধারণ মানুষের কাছে ছিলেন খুবই বিনয়ী ও কর্তব্য পরায়ণ। অত্যন্ত মানবিক এই মানুষটি দেশে-বিদেশে বঞ্চিত জনগণের পক্ষে নিষ্ঠার সঙ্গে ভূমিকা রেখেছেন।
সাতবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ফজলে রাব্বী মিয়া জনমনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন বলে আশা প্রকাশ করেন শামসুল হক টুকু। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ফজলে রাব্বী মিয়া সংসদীয় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি শিশুদের আগামীর ভবিষ্যৎ গড়ে দেওয়ার জন্য শিশুর অধিকার নিয়ে সবসময় কাজ করেছেন। এ ছাড়া নারীর অধিকার, সামাজিক অধিকার, প্রতিবন্ধী ও সমাজের অবহেলিত শ্রেণির উন্নয়নে নিজেকে সবসময় বিভিন্ন সংগঠনের সাথে নিয়োজিত রেখেছেন।
বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সংসদ অধিবেশন খুব আগ্রহ নিয়ে পরিচালনা করতেন সদ্যপ্রয়াত ডেপুটি স্পিকার। তিনি সংসদ পরিচালনার ক্ষেত্রে সবসময় সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করতেন। আবার বিরতি পেলেই ছুটে যেতেন নির্বাচনী এলাকায়। সংসদ ভবনের বাসায়ও এলাকার জনগণের ভিড় দেখা যেত। তিনি দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছিলেন। এ সময় তিনি তাঁর রুহের মাগফিরাত কমনা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে মরহুম ফজলে রাব্বীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। আলোচনা শেষে তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। গত ২৩ জুলাই ভোররাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়ার্কের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ডেপুটি স্পিকার।
এ জাতীয় আরো খবর..