জনগণকে রাজপথে নামার প্রস্তুতির ডাক দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাস্তায় না নামলে কিছু হবে না, রাস্তা দখল করতে হবে। সবাই রেডি হয়ে যান, তৈরি হয়ে যান। এই ফ্যাসিস্ট কর্তৃত্ববাদী সরকারকে টেনে-হিঁচড়ে নামাব এবং আমরা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব-এটা হোক আজকে আমাদের শপথ।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি এই আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারকে আর সময় দেওয়া চলবে না। এখন আমাদের দাবি একটাই- এক দফা এক দাবি হাসিনা তুমি করে যাবে। এক দফার দাবি আদায়ের লক্ষ্যে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে, জনগণের প্রতিনিধিদের পার্লামেন্টে পাঠানোর লক্ষ্যে, আমাদের গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী খালেদা জিয়া যিনি আমাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এখন সুদূর আট হাজার মাইল দূর থেকে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। আমরা বিশ্বাস করি, তার সফল নেতৃত্বে এ দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হবে এবং দেশকে অবশ্যই অবশ্যই মুক্ত করতে সক্ষম হব।
জনগণই সরকারের হাতে হারিকেন তুলে দেবে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপির নেতাদের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দেবেন। হারিকেন ধরানোর সময় শেষ আপনাদের। হারিকেন ধরানোর টাইম পাবেন না, পেছনের রাস্তায় দিয়ে যাওয়ারও সময় পাবেন না। এ রকম বহু ঘটনা আছে। শ্রীলঙ্কায় রাজাপক্ষে পালাতে গিয়েও সহজে পালাতে পারছিল না, আর প্রধানমন্ত্রী তো পালাতেই পারেননি, মালদ্বীপে গিয়ে বসে আছেন। পালাতে চাইলেও জনগণ পালাতে দেয় না। কথাগুলো মনে রাখবেন।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে আপনারা এই বাংলাদেশকে একটা শ্মশানে পরিণত করেছেন। গত ১৫ বছরে এই বাংলাদেশকে একটা পুরোপুরি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন এবং ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। কোথায় সাফল্য আপনাদের? এই মেট্রো রেল দেখিয়ে বলেন, পদ্মা সেতু দেখিয়ে বলেন- এখানে নাকি ওদের সব সাফল্য। সবচেয়ে বেশি মানুষ যারা দারিদ্র্য সীমার নিচে চলে গেছে, আমাদের মানুষ দুই বেলা খেতে পারে না, সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ তারা আজকে হাহাকার করছে।
ভোলার ঘটনা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ভোলায় ৩১ তারিখ আমাদের এক সহকর্মী খুন হয়েছেন। ভোলা বঙ্গোপসাগরের উপকূলে শান্তিপ্রিয় একটি জেলা। আমরা কখনো শুনিনি সেখানে রক্ত ঝরতে। সেই ভোলায় বিনা কারণে অতর্কিত আক্রমণ করে পুলিশের গুলিতে আবদুর রহিমকে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পুলিশ বাহিনী শুধু আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে সম্পূর্ণ ব্যবহার করে তারা একতরফা হত্যা-নির্যাতন করে চলেছে। আমরা এই বাংলাদেশের মানুষ এভাবে নীরব হয়ে বসে থাকতে পারি না। আমাদের অতীত ঐতিহ্য স্মরণ করে আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে যেভাবে নব্বইয়ে গর্জে উঠেছিল মানুষ, '৫২ সালে সালাম-বরকতের মধ্য দিয়ে গর্জে উঠেছিল মানুষ, '৬৯-এর আসাদের শাহাদাতের মধ্য দিয়ে গর্জে উঠেছিল মানুষ, আজকেও শাহাদাতের মধ্য দিয়ে আমাদের সেইভাবে গর্জে উঠতে হবে।
মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব আমিনুল হক ও রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির শামসুজ্জামান দুদু, আবদুস সালাম, আবদুস সালাম আজাদ, কামরুজ্জামান রতন, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, মীর সরফত আলী সপু, সাইফুল আলম নিরব, ইকবাল হোসেন শ্যামল, মহানগর বিএনপির ইশরাক হোসেন, ইউসুফ মৃধা, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, মহিলা দলের নিলোফার চৌধুরী মনি, হেলেন জেরিন খান, ওলামা দলের শাহ নেসারুল হক, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, তাঁতীদলের আবুল কালাম আজাদ, মতস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, ছাত্রদলের কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এ জাতীয় আরো খবর..