ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তিন মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে আলোকচিত্র সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের আপিল আগামী ৩১ অক্টোবরে মধ্যে হাইকোর্টে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ তিন মামলার কার্যক্রমে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে। এ স্থগিতাদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের তিনটি আবেদন নিষ্পত্তি করে সোমবার আদেশ দেন বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম ও অমিত দাশগুপ্ত।
কাজলের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী বি এম ইলিয়াস ও জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
আইন কর্মকর্তা অমিত দাশগুপ্ত পরে কালের কণ্ঠকে বলেন, “হাইকোর্টে বিচারাধীন আপিল তিনটি শুনানির জন্য রয়েছে। যে কারণে অন্তবর্তী আদেশে স্থগিতাদেশ না দিয়ে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে আপিল তিনটি নিষ্পত্তি করতে বলেছেন আপিল বিভাগ। ”
কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের তিন মামলায় গত বছর ৮ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে তিনটি আপিল করেন তিনি। গত ১ জুন হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে মামলা তিনটির কার্যক্রমে স্থগিত করেন। সেই সঙ্গে সাইবার ট্রাইব্যুনালে থাকা মামলার নথিও তলব করেন হাইকোর্ট।
যুব মহিলা লীগের নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার ওয়েস্টিন হোটেলকেন্দ্রিক কারবারে ‘জড়িতদের’ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে ২০২০ সালের ৯ মার্চ মানব জমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলাটি করেন মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি সাইফুজ্জামান শিখর।
একই ঘটনায় পরদিন হাজারীবাগ থানায় মামলা করেন ওসমান আরা বেলী এবং ১১ মার্চ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আরেক সদস্য সুমাইয়া চৌধুরী বন্যা কামরাঙ্গীরচর থানায় আরেকটি মামলা করেন। পরে তিন মামলাতেই কেবল কাজলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
এক সময় দৈনিক সমকাল ও বণিক বার্তায় ফটো সাংবাদিক হিসেবে কাজ করা কাজল ‘পক্ষকাল’ নামের একটি পাক্ষিক পত্রিকা সম্পাদনা করছিলেন। মামলা হওয়ার পরদিন অর্থাৎ ২০২০ সালের ১০ মার্চ বকশিবাজারের বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন তিনি।
এ ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে একটি অপহরণ মামলা করা হয়। এজাহারে অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে লেখালেখির কারণে অজ্ঞাতনামা কেউ তাকে ‘অপহরণ’ করেছে। প্রায় দুই মাস পর ওই বছরের ২ মে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত থেকে কাজলকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় বিজিবি। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা হয়।
যশোর থেকে ঢাকায় আনার পর ২০২০ সালের জুনে কাজলকে ঢাকায় এনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের তিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ওই বছর নভেম্বনে হাইকোর্ট তাকে জামিন দিলে ওই বছর ২৫ ডিসেম্বর তিনি মুক্তি পান।
এ জাতীয় আরো খবর..