ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন গত বছরের জুলাই মাসে কারাগারের অধীন হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোনে জুম মিটিংয়ে অংশ নেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর ব্যাপক আলোচনায় আসে। ওই ঘটনায় আট কারারক্ষীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় কারা কর্তৃপক্ষ।
শুধু হাসপাতাল থেকেই নয়, খোদ কারাগার থেকেই প্রতিনিয়ত বন্দিরা কথা বলতে পারছেন তাদের স্বজনদের সঙ্গে।
চেষ্টা করেও কারাগারগুলোতে অবৈধ ফোন কল থামানো যাচ্ছে না, যা ভাবিয়ে তুলেছে কারা কর্তৃপক্ষকে। এ অবস্থায় কারাগারে শক্তিশালী জ্যামার বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ও গাজীপুরের কাশিমপুরের তিনটি কারাগার এবং নারায়ণগঞ্জ কারাগারে বসানো হবে এই জ্যামার।
অবশ্য কয়েক বছর আগে কাশিমপুরের চারটি কেন্দ্রীয় কারাগারে ৮৮টি মোবাইল জ্যামার বসানো হয়। তবে এই জ্যামারগুলোর মধ্যে ৭০টিরও বেশি বিকল হয়ে গেছে। এ ছাড়া আর্থিক সুযোগ নিয়ে জ্যামারগুলো বন্ধও রাখা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, কারা নিরাপত্তা আধুনিকায়নের আওতায় কারাগারভিত্তিক কম্প্রিহেনসিভ মোবাইল ফোন জ্যামার বসানোর উদ্দেশ্যে একটি কমটি গঠন করা হয়েছে। গত ২১ জুলাই একটি সভাও হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জ্যামারের টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন নতুনভাবে প্রণয়নের জন্য অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মো. আবরার হোসেনের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি কারাগারগুলো পরিদর্শন করে রিপোর্ট দেবে। জানা গেছে, গতকাল বুধবার কমিটির সদস্যরা কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ১ ও ২ এবং হাইসিকিউরিটি কারাগার পরিদর্শন করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিআইজি প্রিজন্স তৌহিদুল ইসলাম গতকাল বলেন, ‘মোবাইল জ্যামার বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কারা কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, কারাগারে মোবাইল ফোন বন্ধে কর্তৃপক্ষের চেষ্টার অন্ত নেই, কিন্তু কিছু কারারক্ষী এ কাজটা করে থাকেন। যাদের ধরা যায়, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। গত দুই-তিন বছরে অর্ধশতাধিক কারাক্ষীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর পরও থামানো যাচ্ছে না। তার মতে, শক্তিশালী জ্যামার বসানোর পর কাজটা সহজ হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এবার যে জ্যামারগুলো কারাগারগুলোতে বসানো হবে, সেগুলো অত্যাধুনিক। এগুলো ঢাকার কারা অধিদপ্তর থেকে মনিটর করা হবে। এ ছাড়া স্থানীয় কারাগারেও মনিটরিং সিস্টেম থাকবে। আগে বসানো জ্যামারগুলো স্থানীয় কারাগার থেকে মনিটর করা হতো। ওই সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে সরকারিভাবে মোবাইল ফোনে বন্দিদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার যে নিয়ম চালু করা হয়েছে, সেটি অব্যাহত থাকবে। নির্দিষ্ট কক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্দিরা সরকারি মোবাইল ফোনে কথা বলতে পারবেন। এই কক্ষ জ্যামারের আওতামুক্ত থাকবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে কাশিমপুরের চারটি কেন্দ্রীয় কারাগারে ৮৮টি মোবাইল জ্যামার বসানো হয়। তবে এই জ্যামারগুলোর মধ্যে ৭০টিরও বেশি বিকল হয়ে গেছে। এ ছাড়া আর্থিক সুযোগ নিয়ে জ্যামারগুলো বন্ধও রাখা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। কারাগারের ভেতরে অসাধু কারারক্ষীরা মোবাইল ফোনের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ জাতীয় আরো খবর..