সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোর কাছে ২৬ হাজার ২২৯টি জমিসহ বাড়ি হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মাধ্যমে পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সব উপজেলাসহ ৫২টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত উপজেলা হিসেবেও ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি এই ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের কাছে ঘরের দলিল ও চাবি হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি পাঁচটি জেলার পাঁচটি স্থানের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন।
মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় গণভবন প্রান্ত থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিচালক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান।
সারা দেশে আশ্রয়ণ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে ৬৭ হাজার ৮০০টি বাড়ি বরাদ্দ দেওয়ার কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে আজ হস্তান্তর করা হয়েছে ২৬ হাজার ২২৯টি বাড়ি। এর আগে গত ২৬ এপ্রিল ৩২ হাজার ৯০৪টি বাড়ি হস্তান্তর করা হয়। আর আট হাজার ৬৬৭টি বাড়ি নির্মাণাধীন। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন আজ গৃহহীন পরিবারগুলোর কাছে এসব বাড়ি হস্তান্তর করবে।
এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরকলাকোপা আশ্রয়ণ প্রকল্প, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা আশ্রয়ণ প্রকল্প, ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চর ভেলামারী আশ্রয়ণ প্রকল্প, পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাহানপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার জঙ্গালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।
আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর আওতায় প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ৬৩ হাজার ৯৯৯টি বাড়ি হস্তান্তর করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০২১ সালের ২০ জুন ৫৩ হাজার ৩৩০টি বাড়ি হস্তান্তর করা হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে মোট এক লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি বাড়ি হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে তৃতীয় পর্যায়ে ৬৭ হাজার ৮০০টি বাড়ি হস্তান্তরের কাজ চলছে।
আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে অধিক টেকসই ও জলবায়ুসহিষ্ণু করতে ঘরগুলোর নকশা পরিবর্তন করা হয়। এতে ঘরগুলোর নির্মাণ খরচ বেড়ে যায়। এতে প্রতিটি ঘরের নির্মাণব্যয় এক লাখ ৯১ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে দুই লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকায় উন্নীত হয়। ঘরগুলোকে অধিকতর টেকসই করে নির্মাণ করতে মজবুত কড়ি কাঠ, পাথরের সর্দল ও রিইনফোর্স কংক্রিট কলাম (আরসিসি) পিলার ব্যবহার করা হয়েছে।
ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত উপজেলাগুলো হচ্ছে- ঢাকার নবাবগঞ্জ, মাদারীপুরের মাদারীপুর সদর, শরীয়তপুরের ডামুড্যা, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী, টাঙ্গাইলের গোপালপুর, মানিকগঞ্জের ঘিওর, সাটুরিয়া, রাজবাড়ীর কালুখালী, ফরিদপুরের নগরকান্দা, নেত্রকোনার মদন, ময়মনসিংহের ভালুকা, নান্দাইল, ফুলপুর, ফুলবাড়িয়া, জামালপুরের বকশীগঞ্জ, চট্টগ্রামের পটিয়া, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর, রামগঞ্জ, ফেনীর ফেনী সদর, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী, পরশুরাম, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, পঞ্চগড়ের আটোয়ারী, পঞ্চগড় সদর, দেবীগঞ্জ, তেঁতুলিয়া, বোদা।
এ ছাড়া ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত উপজেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী, নীলফামারীর ডিমলা, নওগাঁর রাণীনগর, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি, রাজশাহীর মোহনপুর, চারঘাট, বাঘা, বগুড়ার নন্দীগ্রাম, দুপচাঁচিয়া নাটোরের বাগাতিপাড়া, পাবনার ঈশ্বরদী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ড, সাতক্ষীরার তালা, মাগুরা সদর, শ্রীপুর, মোহম্মদপুর, শালিখা, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া, পটুয়াখালীর দশমিনা।
এ জাতীয় আরো খবর..