×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৭-১৮
  • ৭৭ বার পঠিত
জ্বালানি সাশ্রয়ে দেশজুড়ে রাত ৮টার মধ্যে দোকানপাট, শপিংমল বন্ধ করতে নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এই সময়ের মধ্যে দোকান ও শপিংমল বন্ধ করা না হলে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মঙ্গলবার থেকে বিষয়টি কঠোরভাবে নজরদারি করবে বিদ্যুৎ বিভাগ।

এ দিন জ্বালানি সাশ্রয়ে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংসহ আরও বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর সঙ্গে দোকানপাট শপিংমল রাত ৮টার মধ্যে বন্ধসহ বেশ কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। এর আগে সোমবারই চলমান জ্বালানি-সংকট পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ইউরোপের প্রতিটি দেশ জ্বালানি সাশ্রয়ে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। কেউ কেউ জ্বালানির দাম বাড়াচ্ছে। এশিয়ার দেশগুলোও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। এখন একটা সংকটময় সময় পার করছে গোটা বিশ্ব। এর মূল কারণ হচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।

এর আগে গত ২০ জুন সারাদেশে সব ধরনের আলোকসজ্জা নিষিদ্ধ করা হয়। একই সময় থেকে শপিংমল, দোকানপাট রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ করতে বলা হয়। মাঝে ঈদের কেনাকাটার জন্য ১ থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত শপিংমল ও দোকানপাট বন্ধের সময় রাত ১০টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। এরপর থেকে আবার ৮টায় বন্ধ করার সিদ্ধান্ত বহাল হয়েছে।

বিশ্ববাজারে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ও জ্বালানি তেলের দাম চড়া। তাই বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে এলএনজি ও তেল আমদানি কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। জ্বালানি সরবরাহ কমলে বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমবে। ঘাটতি পূরণ করতে সারাদেশে এলাকাভিত্তিক দিনে এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হবে।

সাশ্রয়ের কোনো বিকল্প ছিল কি না, এমন প্রশ্নে নসরুল হামিদ বলেন, এখন এসব সিদ্ধান্ত না নিলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হবে। ডিজেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ইউনিটপ্রতি খরচ পড়ছে ৪০ টাকা। অথচ পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুৎ বিক্রি করা হয় সাড়ে পাঁচ টাকা। এলএনজি কিনতে ইউনিটপ্রতি খরচ পড়বে ৩৯ টাকা। গ্রাহকের কাছে এক ইউনিট গ্যাস বিক্রি করে গড়ে পাওয়া যায় সাড়ে ৯ টাকা। দাম স্থিতিশীল রেখে সরকারি ভর্তুকি সাশ্রয়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। আপাতত জ্বালানির দাম বাড়ানোর চিন্তা নেই সরকারের।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হবে। তবে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে শিল্পকারখানা লোডশেডিংয়ের বাইরে থাকবে। বিতরণ কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যেই এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের তালিকা দিতে শুরু করেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ মনে করছে, সন্ধ্যার পর সর্বোচ্চ চাহিদার সময়ে এক ঘণ্টা লোডশেডিং করে ৯৭৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা যাবে।

ডিজেলচালিত সব বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখা হবে। গ্যাসের সরবরাহ কিছুটা কমতে পারে। এক সপ্তাহ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এক ঘণ্টায় কাজ না হলে দুই ঘণ্টা করা হতে পারে লোডশেডিং।

বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে ২০ শতাংশ ডিজেলের ব্যবহার কমানোর চিন্তা করছে সরকার। বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে ১০ শতাংশ ডিজেল সাশ্রয় করা যাবে। বাকি ৯০ শতাংশ ব্যবহার করা হয় পরিবহনসহ অন্যান্য খাতে। এসব খাত থেকে ১০ শতাংশ ব্যবহার কমাতে হবে।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, সপ্তাহে এক দিন পেট্রলপাম্প বন্ধ রাখার নির্দেশনা এসেছে। পেট্রলপাম্প মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেবে বিপিসি।

জ্বালানি তেল সাশ্রয়ের ফলে কী পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় হবে, জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি বিপিসি হিসাব–নিকাশ করে জানাবে।

জ্বালানি-সংকট পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে সরকারি অফিস সময়সূচি দুই ঘণ্টা কমিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনার সময়ের বাইরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) বন্ধ রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। সরকারি অফিসের এসি নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়টিও আলোচনা হয়েছে। সরকারি গাড়ির ব্যবহার কমিয়ে আনতে সব সভা অনলাইনে করার পরামর্শ এসেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat