দেশের সংগীতের জন্য আজ মন খারাপ করার একটা দিন। এই দিনে দেশের সংগীতাঙ্গন হারিয়েছে অনেক শ্রোতাপ্রিয় গানের সুরস্রষ্টা আলম খানকে। সারা জীবন ঢাকায় কাটিয়ে দেওয়া আলম খানের মৃত্যুর পরের চিরস্থায়ী ঠিকানা হচ্ছে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের মহাজিরাবাদ এলাকার পাহাড় চূড়ায় নির্মিত মসজিদুল আউলিয়া হজরত খাজা শাহ মোজাম্মেল হক (র.)–এর প্রাঙ্গণে জান্নাতুল ফেরদৌস কমপ্লেক্সে। এখানেই তাঁকে সমাহিত করা হবে বলে জানান ছেলে আরমান খান। এই কমপ্লেক্সে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন এই সুরস্রষ্টা ও সংগীত পরিচালকের স্ত্রী হাবিবুননেসা গুলবানু।
আরমান খান বলেন, ‘আম্মাকে ওখানে কবর দেওয়ার পর থেকেই আব্বা বলেছিলেন, ‘তিনি মারা যাওয়ার পর যেন সেখানেই কবর দেওয়া হয়। আমরাও আব্বার ইচ্ছা অনুযায়ী মায়ের পাশেই কবর দেওয়া বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
কয়েক বছর ধরেই অসুস্থ ছিলেন আলম খান। আজ শুক্রবার সকালে হঠাৎ জানা যায়, তাঁর পৃথিবীর ভ্রমণ শেষ হয়েছে। শ্রীমঙ্গলে নেওয়ার আগে বাংলা গানের কিংবদন্তি সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলম খানের দুই দফায় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জানাজা বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে ঢাকার তেজগাঁওয়ের চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে এবং দ্বিতীয় জানাজা বাদ আসর এফডিসিতে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে।
আলম খান
আলম খানের সুর ও সংগীত পরিচালনায় সৃষ্ট অসংখ্য গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো—‘চুমকি চলেছে একা পথে’, ‘হীরামতি হীরামতি ও হীরামতি’, ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো গন্ধ বিলিয়ে যাই’, ‘বুকে আছে মন’, ‘ সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘ভালোবেসে গেলাম শুধু’, ‘আজকে না হয় ভালোবাসো আর কোনো দিন নয়’, ‘তেল গেলে ফুরাইয়া’, ‘আমি তোমার বধূ তুমি আমার স্বামী’, ‘মনে বড় আশা ছিল’, ‘দুনিয়াটা মস্ত বড়’, ‘ও সাথীরে যেও না কখনো দূরে’, ‘কাল তো ছিলাম ভালো’, ‘ওরে ও জান আমারই জান’, ‘ভালোবাসিয়া গেলাম ফাঁসিয়া’ ইত্যাদি।
আলম খান ১৯৪৪ সালে সিরাজগঞ্জের বানিয়াগাতি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা আফতাব উদ্দিন খান ছিলেন সেক্রেটারিয়েট হোম ডিপার্টমেন্টের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার ও মা জোবেদা খানম ছিলেন গৃহিণী। আলম খান ১৯৬৩ সালে রবিন ঘোষের সহকারী হিসেবে ‘তালাশ’ চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালনা করেন।
এ জাতীয় আরো খবর..