দলের ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপিতে নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে প্রায় দুই বছর আগে একই ঘটনায় ১৮ নেতার মধ্যে বৃহস্পতিবার তিনজনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং ওয়ার্ড সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বহিষ্কার হওয়া ১৪ নেতা ও তাদের অনুসারীদের পক্ষ থেকে উত্তরের সদস্যসচিব আমিনুল হককে ঢাকা-১৮ আসন এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় এই উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। কোরবানির ঈদের পর পরিস্থিতি মুখোমুখি হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার আমিনুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে আমিনুল হকের ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা জানান, শুধু আমিনুল হককে টার্গেট করে তার বিরুদ্ধে কথা বলা উদ্দেশ্যমূলক। এ নিয়ে আমিনুল হক ন্যূনতম চিন্তিত নন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে ঢাকা-১৮ উপনির্বাচনে যুবদল নেতা এস এমন জাহাঙ্গীরকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। এতে মনোনয়নপ্রত্যাশী দুই প্রার্থী বিএনপি নেতা কফিল উদ্দিন আহমেদ ও বাহাউদ্দিন সাদী অনুসারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উত্তরার ভাড়া বাসায় ডিম ছুড়ে মারে। এ ঘটনায় ওই সময় বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের উত্তরার বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের ১৮ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাদের মধ্য থেকে বৃহস্পতিবার তিনজন নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায়। এ নিয়ে বাকিদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর উত্তরের উত্তরা পূর্ব থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম হান্নান মিলন, সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক মো. শরীফ হোসেন এবং দক্ষিণখান থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দেওয়ান মো. নাজিম উদ্দিনকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে ইতোপূর্বে বহিষ্কার করা হয়েছিল। নির্দেশক্রমে সেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এদিকে স্বজনপ্রীতি, বিতর্কিত লোকদের দিয়ে ওয়ার্ড কমিটি গঠনসহ নানা অভিযোগ তুলে ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব আমিনুল হককে ঢাকা-১৮ আসন এলাকা উত্তরায় অবাঞ্ছিত করেছেন দলের একাংশের নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি ওয়ার্ড সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট হট্টগোলের অভিযোগে ১৪ জন স্থানীয় নেতাকে বহিষ্কার করা হয়। এসব বহিষ্কৃত নেতাকর্মী ও তাদের অনুসারীরা আমিনুল হককে অবাঞ্ছিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। তারা বলেন, এখন থেকে আমিনুল ঢাকা-১৮ আসনে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারবেন না।
এ বিষয়ে বিমানবন্দর থানার বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা এস এম নুরুল ইসলাম নুরু বলেন, ‘বহিষ্কার আদেশ ওঠানো ও কমিটি সমন্বয়ের মাধ্যমে পুনর্গঠন না করলে আমিনুলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ চলবে। আমাদের কথা পরিষ্কার, উত্তরায় যেখানে আমিনুল সেখানেই প্রতিরোধ। ’
তিনি বলেন, 'আমাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি। অনৈতিকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সবাইকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। যত দিন আমাদের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার না হবে তত দিন আমিনুল হককে ঢাকা-১৮ আসন এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না। '
এ জাতীয় আরো খবর..