শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছেন একাধিক সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজি মামলার আসামি। তিনি মাস ছয়েক আগেও গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটেছেন। নবনির্বাচিত ছাত্রলীগের এই নেতা হলেন মোহাম্মদ আল রাজু।
মঙ্গলবার সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন পারভেজ ও সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হাকিম সম্রাট শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটির কমিটি অনুমোদন দেন।
এ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আল রাজু ও তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন কর্মীর ফেসবুক আইডি ঘুরে দেখা যায়, বছর দুয়েক হলো নিজেকে পরিচয় দিতেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও ঢাকা উত্তরের ৫১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের কর্মী হিসেবে। একাধিক ব্যানার ও ফেস্টুনে নিজের এমন পরিচিতি উল্লেখ করেছেন রাজু। তিনি ৫১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের কার্যালয়ে একাধিক বৈঠকের ছবিও ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।
জানতে চাইলে উত্তরা পশ্চিম থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিল উজ্জামান বিপুল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রাজু তো যুবলীগের কর্মী। তার নাম শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটি ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দেখে আমি অবাক হয়েছি। রাজুর বিরুদ্ধে মাদকসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। ’
হাতে আসা একাধিক মামলার কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ব্লক অ্যান্ড হোয়াইট অ্যাপারেলস নামের একটি বায়িং হাউসে হামলার অভিযোগে রাজুকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা দায়ের হয়। ভুক্তভোগী মামুন মোল্লা রাজুর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, হত্যাচেষ্টা, ভাঙচুরের অভিযোগ দেন। এ মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জেল খাটেন রাজু।
এর আগে ২০২০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটির চায়ের দোকানে একজনকে মারধর করে আহত করার অভিযোগে রাজুর বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়েরকৃত এ মামলার বাদী মেহেদী হাসান হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিটের অভিযোগ দায়ের করেন। এতে রাজুকে ২ নম্বর আসামি করা হয়।
উত্তরা পশ্চিম থানা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, রাজু দীর্ঘদিন ধরেই চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ মাদকের সঙ্গে যুক্ত। প্রায় দিনই রাতে তাকে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটির সামনে মাতলামি করতে দেখা যায়। স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে সখ্য থাকায় রাজু অনেক কিছু থেকে পার পেয়ে যান।
একাধিক মামলা ও জেল খাটার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোহাম্মদ আল রাজু বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ষড়যন্ত্র করে এসব মামলা দিয়েছে। আসলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা চাঁদাবাজির সঙ্গে আমি কোনোভাবেই যুক্ত নই। ’
সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন পারভেজ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কমিটি ঘোষণার পর রাজুর বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ এসেছে। আগে আমাদের কাছে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আসেনি। আমরা অভিযোগের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। ’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টচার্যের মোবাইলে কল দেওয়া হলেও তারা ধরেননি।
এ জাতীয় আরো খবর..