×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৭-০৬
  • ৮৪ বার পঠিত
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ কমাতে এবং ডলার সাশ্রয় করতে বিলাসী পণ্য আমদানিতে শতভাগ এলসি মার্জিন আরোপ করা হয়েছে।

একই সঙ্গে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া বাকি সব পণ্য আমদানির এলসি খোলার ক্ষেত্রে ঋণ বিতরণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এক মাস ২৫ দিনের মাথায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এলসি মার্জিন আরও বাড়াল। একই সঙ্গে মার্জিন দেওয়ার ক্ষেত্রে ঋণ বন্ধ করে দিল। এর আগে গত ১০ মে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক সার্কুলারে বিলাসী পণ্য আমদানিতে ৭৫ শতাংশ ও বাণিজ্যিক পণ্য আমদানিতে ৫০ শতাংশ মার্জিন আরোপ করেছিল। এতেও আমদানিতে লাগাম টানা সম্ভব হয়নি। ফলে মার্জিনের হার আরও বাড়ানো হলো।

সার্কুলারে বলা হয়, মোটর কার, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স হোম অ্যাপ্লায়েন্স, স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার, মূল্যবান ধাতু, মুক্তা, তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, প্রসাধনী, আসবাবপত্র ও সাজসজ্জা সামগ্রী, ফল ও ফুল, নন সিরিয়াল ফুড যেমন : অশস্য খাদ্যপণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য ও পানীয়; যেমন : টিনজাত খাদ্য, চকলেট, বিস্কুট, জুস, সফট ড্রিংকস প্রভৃতি, অ্যালকোহলজাতীয় পানীয়, তামাক, তামাকজাত পণ্য বা এর বিকল্প পণ্যসহ অন্যান্য বিলাসজাতীয় পণ্যের আমদানির এলসি খুলতে এখন থেকে শতভাগ নগদ মার্জিন দিতে হবে।

অর্থাৎ এসব পণ্য আমদানিতে এখন যে অর্থের এলসি খোলা হবে তার পুরোটাই নগদ আকারে গ্রাহককে দিতে হবে। এর বিপরীতে গ্রাহকের নিজ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বা অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মার্জিনের অর্থ দেওয়া যাবে না। আগে এসব পণ্য আমদানিতে ৭৫ শতাংশ মার্জিন দিতে হতো। তবে ঋণ নিতে কোনো বাধা ছিল না। এখন নতুন করে ঋণ নেওয়া বন্ধ করে দিল।

এতে আরও বলা হয়, শিশুখাদ্য, অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য, জ্বালানি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক স্বীকৃত জীবনরক্ষাকারী ওষুধ ও সরঞ্জামসহ চিকিৎসাসংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, উৎপাদনমুখী স্থানীয় শিল্প ও রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য সরাসরি আমদানি করা মূলধনি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল, কৃষি খাতসংশ্লিষ্ট পণ্য এবং সরকারি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ব্যতীত অন্য সব পণ্যের আমদানির এলসি খোলার ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ নগদ মার্জিন দিতে হবে।

অর্থাৎ উল্লিখিত অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া বাকি সব পণ্য আমদানিতে এখন থেকে যে অর্থের এলসি খোলা হবে, এর মধ্যে কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ নগদ আকারে দিতে হবে। এর বিপরীতে কোনো ঋণও নেওয়া যাবে না। আগে এর বিপরীতে ৭৫ শতাংশ মার্জিন দিতে হতো। তবে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা ছিল না। এখন নতুন করে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১১ এপ্রিল অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া সব ধরনের পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ এলসি মার্জিন আরোপ করেছিল। মূলত আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সাশ্রয় করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতেও আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হওয়ায় ৩০ দিনের মাথায় ১০ মে মার্জিনের হার বাড়িয়ে দ্বিগুণ ও তিনগুণ করা হয়েছে। সাম্প্রতিককালে এত ব্যাপক হারে এলসি মার্জিন কখনোই আরোপ করা হয়নি।

সূত্র জানায়, করোনা-পরবর্তী পরিস্থিতি ও বহির্বিশ্বে যুদ্ধাবস্থার কারণে বিরাজমান বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রেক্ষাপট, মুদ্রা ও ঋণ ব্যবস্থাপনার সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মার্জিন বাড়ানো ও ঋণ বন্ধ করার ফলে এখন থেকে ওইসব পণ্য আমদানিতে গ্রাহকদের পুরো অর্থ নগদ আকারে দিতে হবে। এত অর্থ নগদ আকারে দেওয়া অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়। ফলে এসব পণ্য আমদানিতে খরচ বাড়বে। একই সঙ্গে বাড়ছে আমদানি করা পণ্যের দাম। এতে দেশীয় পণ্যের ব্যবহার বাড়ার সুযোগ তৈরি হবে। একই সঙ্গে আমদানি কমে রিজার্ভেও সাশ্রয় হবে। চাপ কমবে ডলারে।

কিন্তু নগদ অর্থে ওইসব পণ্য আমদানির ফলে এগুলোর দাম বেড়ে যাবে। তাই মূল্যস্ফীতির হারেও আরও চাপ বাড়বে। তবে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে। এর আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলাসী পণ্যে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat