×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৭-০৬
  • ৪৩৯ বার পঠিত
গ্যাসস্বল্পতায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটায় দেশজুড়ে বিদ্যুতের লোড শেডিং চলছেই। অনেক এলাকায় দিনে ও রাতে দফায় দফায় লোড শেডিংয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। হঠাৎ করেই শুরু হওয়া লোড শেডিং কবে দূর হবে সে বিষয়ে জ্বালানি খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না।

তবে লোড শেডিংকে শৃঙ্খলায় আনতে পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন।

তিনি বলেন, ‘পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতি ভুলে গেলে চলবে না। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে জ্বালানির বাজারে। যে এলএনজি পাঁচ ডলারে পাওয়া যেত, এখন সেটি ৩৫ থেকে ৪০ ডলার। জার্মানি, ইতালির মতো উন্নত রাষ্ট্রও লোড শেডিং করতে বাধ্য হচ্ছে। ’

বিদ্যুৎ বিতরণকারী কম্পানিগুলো বলছে, গ্যাসস্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তাই চাহিদার বিপরীতে অনেক কম বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে ঘন ঘন লোড শেডিং দিতে হচ্ছে।

পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলছেন, গত মাসের শেষ সপ্তাহে স্পট মার্কেট (খোলাবাজার) থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কিনতে প্রতি ইউনিটে (এমএমবিটিইউ) খরচ হয়েছিল প্রায় ২৫ ডলার। সেটি এখন হয়ে গেছে প্রায় ৪০ ডলার। এ কারণেই সরকার স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ রেখেছে। এলএনজির দাম না কমা পর্যন্ত দেশীয় গ্যাস থেকেই চাহিদা পূরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ জন্য বেশ কয়েকটি কূপে ওয়ার্কওভার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গ্যাস না পাওয়ায় দেশের বেশ কিছু গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্র বন্ধ রাখতে হয়েছে। এতে প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে। ফলে সারা দেশে বেড়ে গেছে লোড শেডিং।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা মানিক হোসেন (ছদ্মনাম) জানান, তাঁর এলাকায় দিনে-রাতে কয়েক দফায় লোড শেডিং হচ্ছে।

সারা দেশে যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়, তার ৫০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। চাহিদামতো বিদ্যুৎ না পেয়ে ঘন ঘন লোড শেডিং দিতে হচ্ছে দেশের বৃহৎ এ বিতরণ কম্পানিকে। জানতে চাইলে আরইবির এক পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আজ (গতকাল) সন্ধ্যা ৭টায় আরইবির ৪৮টি সমিতিতে চাহিদার চেয়ে এক হাজার ৩০৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম রয়েছে। বাধ্য হয়েই ঘন ঘন লোড শেডিং দিতে হচ্ছে। ’

ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার আরইবির গ্রাহক চান মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে ব্যাপকভাবে লোড শেডিং হচ্ছে। এমনিতেই এখন প্রচণ্ড গরম, তার মধ্যে দিনে-রাতে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। ’

পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন গ্যাসের দৈনিক চাহিদা তিন হাজার ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট। গড়ে সরবরাহ করা হতো তিন হাজার থেকে তিন হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট। কয়েক দিন ধরে গ্যাসের সরবরাহ ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট কমে গেছে।

গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি গ্যাসসংকটের প্রভাব পড়ছে আবাসিক ও শিল্প-কারখানায়।

দেশের বিভিন্ন স্থানে লোড শেডিংয়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat