কাছের এক বন্ধুকে মানসিক অসুস্থতার কাছে হেরে যেতে দেখে আনুশা চৌধুরী যে সংগঠনটি গড়ে তুলেছিলেন তা বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্বের বহু দেশের মানুষকে অন্ধকারে পথ দেখাচ্ছে। মানসিক স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিশ্বজোড়া এই অসামান্য অবদানের জন্য এ বছর তিনি ভূষিত হয়েছেন সম্মানজনক ডায়ানা অ্যাওয়ার্ডে। আনুশা চৌধুরী কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (সিইউবি) এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের ডিরেক্টর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
মানসিক অসুস্থতার কাছে বন্ধুর হেরে যাওয়া দেখে আনুশা চৌধুরী ২০১৮ সালে ‘লেটস টক মেন্টাল হেলথ’ প্রতিষ্ঠা করেন।
বিভিন্ন শিল্পের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতনতা সৃষ্টি করাই এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য। বর্তমানে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সূচনালগ্ন থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিপুল সাড়া পাওয়া এই প্রতিষ্ঠানটি আজ একটি আন্তর্জাতিক সংস্থাতে রূপান্তরিত হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ, কানাডা, দুবাই, ভারত, ফিলিপাইন, স্পেন, আমেরিকা ও জাম্বিয়ার মোট ১১২ জন স্বেচ্ছাসেবী এই সংগঠনের হয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া যেকোনো রাষ্ট্রের যেকোনো নাগরিক অনলাইনে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারছেন এই সংস্থা থেকে।
মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রচলিত কুসংস্কার ভাঙতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আনুশা চৌধুরী ও তার সংগঠন 'লেটস টক মেন্টাল হেলথ'। দেশে-বিদেশে ৩৭ হাজারের বেশি মানুষকে ‘মেন্টাল হেলথ কাউন্সেলিং’-এর অওতায় নিয়ে আসা হয়েছে এই সংস্থার পক্ষ হতে।
অনুশা চৌধুরী স্বপ্ন দেখেন এমন একটা পৃথিবীর, যেখানে প্রত্যেকে মানসিক সুস্থতা নিয়ে সচেতন। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই এমন একটা পৃথিবীর দাবিদার যেখানে সহমর্মিতা আর সহানুভূতির চর্চা হয়। ’ আর এ লক্ষ্যে তিনি আমৃত্যু কাজ করে যেতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
সম্প্রতি 'হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল অনলাইন' তাদের ইনস্টাগ্রাম হাইলাইটে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আনুশা চৌধুরীর অনন্যসাধারণ কার্যক্রম নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এ ছাড়া তার সংগঠন বিভিন্ন আয়োজন ও প্রচার চালিয়ে ১২ লাখেরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছতে এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন করতে সক্ষম হয়েছে।
ভবিষতে 'লেটস টক মেন্টাল হেলথ' কার্যক্রম আরো ব্যাপকভাবে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আনুশা চৌধুরী ও সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবীরা। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরির কার্যক্রমও চলছে।
এ জাতীয় আরো খবর..