ম্যাচ শেষে কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলের কাছে ঘুরে ঘুরে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন আঁখি খাতুন। একটু আগেই মালয়েশিয়ার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন বাংলাদেশের এই সেন্টারব্যাক আর তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদানেই মালয়েশিয়াকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।
এমন ম্যাচের পর গণমাধ্যমের কাছে সেন্টারব্যাক আঁখির গুরুত্ব এমনিতেই বেড়ে যাওয়ার কথা। দীর্ঘদেহী হওয়ায় অ্যাটাকিং সেট পিসের সময় ওপরে উঠে যান আঁখি আর তাঁকে কেন্দ্র করেই সাজানো থাকে সেট পিস পরিকল্পনা। বয়সভিত্তিক ফুটবলে তাঁর নামের পাশে আছে অনেক গোল। আজ জাতীয় দলের জার্সিতেও পেলেনে জোড়া গোল। ২টি গোলের উৎসই ছিল কর্নার কিক।
৯ মিনিটে বাংলাদেশের গোলের খাতা খুলেছিলেন আঁখিই। মিডফিল্ডার মারিয়া মান্দার কর্নার থেকে মালয়েশিয়ার গোলকিপার বলের ফ্লাইট মিস করলে গোললাইন থেকে পা লাগিয়ে গোলটি করেন ডিফেন্ডার আঁখি। দলের তৃতীয় গোলটিও তাঁর। কর্নার কিকের পর সাবিনার ক্রস থেকে গোলমুখ থেকে পা লাগিয়ে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন এই সেন্টারব্যাক।
একজন ডিফেন্ডার হয়েও জোড়া গোল। সে রহস্য সম্পর্কে আঁখি বলছিলেন, ‘কর্নার কিকের সময় লম্বা বলে আমি ওপরে উঠে যাই। যে কর্নার কিক নেয়, তার সঙ্গে আমার আগে থেকেই কথা বলা থাকে। বলও পেয়ে যাই আমি।’
বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে আঁখিই সবচেয়ে লম্বা। তাঁকে আলাদাভাবে মাঠে চেনা যায়। আজ তো মালয়েশিয়া দলের ১০ নম্বর জার্সিধারী ডিফেন্ডার ম্যাচ চলাকালে আঁখির কাছে একটি রহস্যও জানতে চেয়েছেন। সেটি কী? শোনা যাক আঁখির কণ্ঠেই, ‘মালয়েশিয়ার ১০ নম্বর জার্সি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছে, “তোমার বয়স কত? তুমি কী খাও?”’
এর আগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এসে বড় হারের কারণ ব্যাখ্যা করে গেছেন মালয়েশিয়ার কোচ জ্যাকব জোসেফ। তিনি বলছিলেন, ‘মাত্র আট দিন আগে অনুশীলন শুরু করেছি। এখানে এসেছি আমার দলের মেয়েদের পরীক্ষা করতে। বাংলাদেশ আগে থেকেই প্রস্তুত, খেলোয়াড়েরা দ্রুতগতির। আজ আমার রক্ষণভাগ একদম শেষ। অধিকাংশ খেলোয়াড় প্রথমবার এত বড় মাঠে, এত দর্শকের সামনে খেলেছে। তাই তারা আতঙ্কিত ছিল কিছুটা।’
এর আগে দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল একবারই। ২০১৭ সালে সিঙ্গাপুরে আমন্ত্রণমূলক তিন জাতির প্রীতি টুর্নামেন্টে মালয়েশিয়ার কাছে ২-১ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। তাই আজকের বড় হারে কিছুটা অবাকই হয়েছেন মালয়েশিয়া কোচ। সেটা তিনি স্বীকারও করেছেন, ‘এই ফলাফলে আমি বিস্মিত।’ তবে মাঠ খুব শক্ত বলেও তাঁর অভিযোগ।
বড় জয়ের পর নিজের দলের খেলোয়াড়দের কৃতিত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী। তিনি বলেছেন, ‘সব সময় জেতার ওপরই জোর দিই। মেয়েরা উন্নতি করেছে, এটাই সন্তুষ্টির জায়গা। সবচেয়ে ভালো দিক, মেয়েরা ৯০ মিনিট খেলার মধ্যে থাকে। আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ীই খেলেছি, যার ফলে এই জয়।’
এ জাতীয় আরো খবর..