×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৬-১৩
  • ৯৫ বার পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। স্টক এক্সচেঞ্জে সরকারি সিকিউরিটিজ লেনদেনের মাধ্যমে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।  

গতকাল রবিবার (১২ জুন) অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় উদ্যোগে স্টক এক্সচেঞ্জ ট্রেডিং প্লাটফর্মে সরকারি সিকিউরিটিজ লেনদেন বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি এবং সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিএসইসি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, (টিডিএম) রেহানা পারভীন। এ ছাড়াও স্টক এক্সচেঞ্জ ট্রেডিং প্লাটফর্মে সরকারি সিকিউরিটিজ লেনদেন চালুকরণ কার্যক্রম বিষয়ে উক্ত অনুষ্ঠানে যৌথভাবে একটি উপস্থাপনা পেশ করেন বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক শেখ মো. লুৎফুল কবির এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক আনোয়ার হোসেন।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান, সিডিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শুভ্র কান্তি চৌধুরী, সিসিবিএলের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম শিকদার, সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম এবং ডিএসইর চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরকারী সকল পক্ষের নির্বাচিত প্রতিনিধিবৃন্দ সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর প্রদান করেন। বিএসইসির পরিচালক মো. আবুল কালাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক (ডিএমডি) খন্দকার সিদ্দিকুর রহমান, ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভুঁইয়া, সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. গোলাম ফারুক এবং সিডিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শুভ্র কান্তি চৌধুরী সমঝোতা স্মারকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর প্রদান করেন।

প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অর্থ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার। প্রধান অতিথি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, পুঁজিবাজার এবং মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সম্মিলিতভাবে কাজ করলে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও প্রবৃদ্ধির আরো উন্নতি হবে। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের এই যৌথ পদক্ষেপকে একত্রে কাজ করার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করেন।

আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, সরকারি সিকিউরিটিজের সেকেন্ডারি লেনদেন স্টক এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মে করার মাধ্যমে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে উঠবে এবং পুঁজিবাজারের বাজার মূলধন অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরো বলেন, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে উঠলে ব্যাংক ঋণের উপর নির্ভরতা কমে আসবে এবং নন পারফর্মিং লোন (এনপিএল) ও কমে আসবে। বর্তমান ১৬ শতাংশ মার্কেট ক্যাপিটাল টু জিডিপি রেশিওকে দ্বিগুণ করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি ভবিষ্যতেও একত্রে সমন্বয় করে পরস্পর সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করে যাবে।

বিএসইসি জানায়, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিও আইডির মাধ্যমে সরকারি সিকিউরিটিজ ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন, যা অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমাদের দেশকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারের স্টক ব্রোকারের মাধ্যমে সরকারি সিকিউরিটিজ বিও আইডিতে ক্রয়-বিক্রয় করতে সক্ষম হবেন।

পুঁজিবাজারে লেনদেনকৃত সরকারি সিকিউরিটিজ এর অভিহিত মূল্য হবে ১০০ টাকা এবং মার্কেট লট হবে ১০০০ অর্থাৎ ন্যূনতম ১ লক্ষ টাকা অভিহিত মূল্যের সরকারি সিকিউরিটিজ স্টক এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মে লেনদেন করা যাবে।

উল্লেখ্য, বিনিয়োগকারীরা ইল্ড অথবা প্রাইস দর উল্লেখ পূর্বক সরকারি সিকিউরিটিজ ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন। বিক্রেতা বিক্রয় মূল্যের সাথে প্রফিট পাবেন এবং ক্রেতা বা বন্ডহোল্ডার কুপন ডেট-এ কুপনের অর্থ ব্যাংক একাউন্টে বিইএফটিএন এর মাধ্যমে জমা পাবেন। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতার কারো ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা থাকবে না।

সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তাদের পোর্টফোলিওতে সরকারি সিকিউরিটিজের মতো ঝুঁকিবিহীন সিকিউরিটিজ অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন, ফলে বিনিয়োগকারীর পোর্টফোলিও ঝুঁকি কমে যাবে। সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে আভ্যন্তরীণ খাত হতে অর্থ সংগ্রহের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে। ফলে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভরতা কমে আসবে। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট তৈরি হবে এবং বাজার মূলধন অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।

সরকারি সিকিউরিটিজ সেকেন্ডারি বা স্টক এক্সচেঞ্জ ট্রেডিং প্লাটফর্মে লেনদেনের কারণে বিভিন্ন মেয়াদের বন্ডের ইল্ড কার্ভ পাওয়া যাবে। এই ইল্ড কার্ভের ভিত্তিতে অন্যান্য বন্ডের কুপন অথবা সুদহার/লভ্যাংশ নির্ধারণ করা সহজ হবে এবং ইল্ড কার্ভের ভিত্তিতে বিভিন্ন মেয়াদের বন্ডের ভবিষ্যৎ লভ্যাংশ প্রাক্কলন করা যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat