×
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৭-১৪
  • ৪৮ বার পঠিত
কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই একতরফা ভাবে বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টার বাণিজ্য সেবা বন্ধ করে দিয়েছে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত আর বাণিজ্য কার্যক্রম চালাতে দিচ্ছে না ভারতের পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে রাতে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। তবে দিনে বাণিজ্য স্বাভাবিক থাকছে।

এর আগে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা আমদানি-রপ্তানি হতো দুই বন্দরের মধ্যেই।
এদিকে, ২৪ ঘণ্টার ১০ ঘন্টা বাণিজ্য সেবা বন্ধ হলে ব্যবসায়ীদের লোকসানের পাশাপাশি আমদানি কমে রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সংশিষ্টরা। এতে আবারও ওপারে পণ্যজটের কবলে পড়বে বাংলাদেশের আমদানিকারকরা।

বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, সন্ধ্যার পর থেকে ১০ ঘণ্টা বাণিজ্যসেবা বন্ধের কারণ জানাতে পেট্রাপোল বন্দর ম্যানেজারকে অনুরোধ করা হয়েছে।

বাণিজ্য সংশিষ্টরা জানান, বাণিজ্য ঘাটতি পূরণ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ১ আগস্ট দু‘দেশের সিদ্ধান্তে সপ্তাহে ৬ দিন ২৪ ঘণ্টার বাণিজ্য সেবা শুরু হয়। আর এ সুযোগে রাত-দিন, এমনকি জরুরি মুহূর্তে শুক্রবারও আমদানি-রপ্তানি ও পণ্য খালাস কার্যক্রম চলতো। এতে আগের চেয়ে বাণিজ্য ও রাজস্বের পরিমাণ ৪০ শতাংশ বেড়ে যায় এবং আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গতিশীলতা আসে।

জানা যায়, এ সময় আমদানির পরিমাণ ৩০০ ট্রাক থেকে বেড়ে ৫০০ ট্রাকে দাঁড়ায়।

আর বছরে রাজস্ব আয় তিন হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ছয় হাজার কোটির ঘরে। তবে হঠাৎ পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো আলোচনা ছাড়াই ১১ জুলাই থেকে ২৪ ঘণ্টার এ বাণিজ্য সেবা বন্ধ করে দেয়। এতে সন্ধ্যা ৬টার পর ওপার থেকে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে ঢুকছে না।
ব্যবসায়ীরা জানান, ২৪ ঘণ্টার বাণিজ্য সেবা বন্ধের প্রভাবে পচনশীল পণ্য, খাদ্যদ্রব্য, শিল্পকারখানার কাঁচামালসহ বিভিন্ন জরুরি পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়ছে। এপারেও আটকে আছে রপ্তানির বিভিন্ন পণ্য।

এতে এরই মধ্যে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ কমে গেছে।
পণ্যবাহী ট্রাকচালক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘রপ্তানি পণ্য নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে বেনাপোল বন্দরে আসি। তবে সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে পণ্যবাহী ট্রাকের গেটপাস না দেয়ায় ভারতে ঢুকতে পারিনি।’

বেনাপোল ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্টাস এন্ড এক্সপোর্টাস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক জিয়াউর রহমান জানান, ‘রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা এ পথে আমদানি-রপ্তানি হতো। এখন সন্ধ্যার পর ভারত বাণিজ্য পরিচালনা করছে না। এতে পচনশীল খাদ্যদ্রব্য নিয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। আর সন্ধ্যার পর পণ্যবাহী ট্রাক ঢুকতে না পারায় বাণিজ্য ঘাটতি বাড়বে।’  পাশাপাশি বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরে পণ্যজট বাড়বে আমদানি-রপ্তানি পণ্যে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট বিষয়ক সম্পাদক সুলতান মাহমুদ বিপুল জানান, বন্দর দিয়ে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা বাণিজ্য সেবা চলছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ আছে। বর্তমানে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত পণ্য আমদানি ও রপ্তানি হচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া পণ্য থেকে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৭শ ৫ কোটি টাকা। ২৪ ঘণ্টা পণ্য আমদানির সুবিধা বন্ধ থাকলে রাজস্ব আয়ে বিরূপ প্রভাব পড়বে।

বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) রেজাউল করিম জানান, বেনাপোল বন্দরে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা বাণিজ্য সেবা চলছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে যেতে দিচ্ছে না। দুই দেশের সিদ্ধান্তে যেখানে ২৪ ঘন্টা আমদানি-রপ্তানির বিষয়টি বলা আছে সেখানে সন্ধ্যার পর বাণিজ্য সেবা বন্ধের কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে। তারা বাণিজ্য সংশিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে জানাবেন বলে বলেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat