×
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৭-০৮
  • ৫৭ বার পঠিত
১৬ বছর ধরে সুরের পথযাত্রী মিফতাহ জামান। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে শুক্রবার (৫ জুলাই) প্রথমবার একক কনসার্ট করলেন এই সংগীতশিল্পী। কনসার্ট শেষে তাঁর গানযাত্রার গল্প শুনেছেন কামরুল ইসলাম।

প্রথম একক কনসার্ট করলেন, প্রত্যাশার বিপরীতে প্রাপ্তি কতটা? 
আমি খুবই খুশি।

যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের সাড়া পেয়ে অভিভূত। একটার পর একটা গানের অনুরোধ যেভাবে এলো, এটা অসাধারণ। ফিনিক্স কমিউনিকেশন যে আয়োজনটা করেছে,  দারুণ! আমার সঙ্গে যাঁরা বাজিয়েছেন, তাঁরাও চমৎকার করেছেন।
কনসার্টের জন্য এত সময় নিলেন কেন?
ম্যাচিওরড হতে সময় লাগে।

আমার গান মানুষ ভালোবেসেছে ঠিক, তবে একক শো করার জন্য অনেক গান প্রয়োজন। দুই-আড়াই ঘণ্টা মানুষকে ধরে রাখার জন্য পর্যাপ্ত মৌলিক গান লাগে। এ জন্য সময় নিয়েছি।
অনুষ্ঠানে দেখলাম আপনার প্রায় প্রতিটি গানের নাম ও কথা শ্রোতাদের মুখস্থ।

বিষয়টা কেমন লেগেছে?
এটা একজন শিল্পীর সর্বোচ্চ প্রাপ্তির মধ্যে অন্যতম। শিল্পীর সঙ্গে সবাই কণ্ঠ মেলাচ্ছে, নাম ধরে ধরে গানের অনুরোধ করছে—চমৎকার প্রাপ্তি। অনুষ্ঠান শেষে যখন মঞ্চ থেকে নামলাম, কী যে শান্তি লেগেছে! এটাই তো চেয়েছিলাম। 
আপনার সবচেয়ে শ্রোতাপ্রিয় গান ‘চির অধরা’র গল্পটা শুনতে চাই...
আমি আর তুষার হাসানের [গীতিকবি] জন্য গানটা স্মরণীয় একটা স্মৃতি। আমরা তখন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।

আবাসিক একটা সেমিস্টার ছিল। ওখানকার উন্মুক্ত একটি জায়গায় বেঞ্চে বসে রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে গানটা লিখেছিল তুষার। মজার ব্যাপার হলো, প্রথমে গানটির কথা ছিল অন্য রকম। মাসখানেক পর তুষারকে কিছু কথা পরিবর্তন করতে বলি। পরে আবার দেখি কথার সঙ্গে সুরটা ঠিক যাচ্ছিল না। এভাবে কথা-সুর পরিবর্তন করে করে গানটা চূড়ান্ত হয়। আর শেষ হওয়ার পর আনন্দে রাত ২-৩টার সময় আমরা রীতিমতো হৈহৈ করে নাচানাচি করেছিলাম!
আপনার গানের চর্চার শুরুটা কিভাবে?
বয়স যখন তিন-চার বছর, তখন থেকেই। বাসায় গানের শিক্ষক আসতেন। প্রথমে রবীন্দ্রসংগীত, পরে নজরুলসংগীত শিখেছি। এ ছাড়া পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর গান শুনে শুনেও চর্চা করেছি। প্রতিদিন সকালে মা জাগিয়ে দিতেন, নামাজ পড়ে রেওয়াজে বসতে বলতেন। একেবারে খাতা ধরে ধরে রেওয়াজ করতাম।

নতুন গান ও পরের কনসার্ট আবার কবে?
‘এক পশলা বৃষ্টি’ শিরোনামের একটি গান পাইপলাইনে আছে। আশা করছি মাস দুয়েকের মধ্যে প্রকাশ করব। রাগাশ্রয়ী একটি গানের কাজও আছে হাতে। নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যেই করব পরের শো। প্রথম কনসার্টে অনেক গান করতে পারিনি, পরের কনসার্টে সেগুলো গাইব আশা করি।

মিফতাহ জামান কি দুঃখবিলাসী? আপনার বেশির ভাগ গানই দুঃখ-বিষাদের বয়ানে ভরপুর...
সত্যিকার অর্থে না। স্ত্রী, পরিবার ও বন্ধুদের আচরণে যা বুঝতে পারি, আমি খুব বাস্তববাদী ও ইতিবাচক মানুষ। তবে আমরা যাঁরা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছি, আমাদের জীবনে সংগ্রাম সব সময় থাকে। এ ছাড়া সাহিত্যের প্রভাবও আছে। নজরুল, রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত অনেক গানই বিরহের। সেগুলো শুনেছি, পড়েছি; ফলে বিরহের সুরটা নাড়া দিত মনে। ব্যক্তিগতভাবে আমি দুঃখবিলাসী নই, সহজে ভেঙে পড়ি না। তবে দুঃখ পেলে মনের ভেতর থেকে সুর বেরিয়ে আসে...হা হা হা।

সারা দেশে, এমনকি ভারতেও আপনার অনেক ভক্ত। বাণিজ্যিকভাবে নিজেকে কতটা সফল শিল্পী মনে করেন?
ভক্তদের হৃদয়ে জায়গা পাওয়ার কথা যদি বলেন, সৃষ্টিকর্তা আমাকে দুহাত ভরে দিয়েছেন। বাণিজ্যের জায়গা থেকে ভাবলে, এখনো অনেক দূর যাওয়া বাকি। গানের বাইরে আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি, আবার নিজের ব্যবসাও আছে। বাণিজ্যিকভাবে সফল হওয়ার জন্য গানে যতটা সময় দেওয়া দরকার, সেটা দিতে পারি না। এটা জেনে-মেনেই গান করছি এবং আমার মনে হয়, পথচলার এই গতিটা ঠিক আছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat