কেরানীগঞ্জে কিশোর এক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকের গলা কেটে তার বাহনটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতাররা হলেন- হ্যাচকা শাকিল ওরফে শাকিল আহমেদ (২০), সজিব (২০), আলমগীর (২০) ও আনন্দ (২০)। এরা সবাই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। এদের দলনেতা হ্যাচকা শাকিল। ঈদ আনন্দের টাকা জোগাতে তার এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা। শনিবার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান।
জানা যায়, বুধবার রাত ১১টার দিকে ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার একটি টিম স্বপ্নধারা মডেল টাউন এলাকা থেকে শাওন নামে এক অটোরিকশা চালককে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে শাওন ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার শাওনের বাবা রাম চন্দ্র দাস (৫৭) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবির বলেন, মামলাটি তদন্ত করার সময় আমরা ঘটনায় জড়িত ৪ কিশোরকে শনাক্ত করতে সক্ষম হই। পরে একে একে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামিরা ঈদের সময় আনন্দ করার জন্য টাকা জোগাড় করার পরিকল্পনা করে। হ্যাচকা গ্রুপের লিডার শাকিলের নির্দেশে আলমগীর তার বন্ধু ভিকটিম শাওনকে কৌশলে তার অটোরিকশাসহ ঘুরতে যাবে বলে ডেকে নিয়ে আসে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামিরা চালককে স্বপ্নধারা মডেল টাউনের নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে শাওন কিছু বুঝে উঠার আগেই আসামি সজিব পেছন থেকে ভিকটিমের মুখ চেপে ধরে। আলমগীর ভিকটিমের পা চেপে ধরে মাটিতে ফেলে এবং শাকিল তার হাতে থাকা চাকু দিয়ে ভিকটিমের গলায় সজোরে আঘাত করে। পরে আলমগীর ও সজিব চাকুটি নিজেদের হাতে নিয়ে ভিকটিমের বুক, পিঠসহ সমস্ত শরীরে ছুরিকাঘাত করতে থাকে। শাকিল পাশে থাকা ইট দিয়ে ভিকটিমের মাথায় সজোরে আঘাত করে এবং চাকুটি নিজের হাতে নিয়ে ভিকটিমকে জবাই করে। কিছুক্ষণ পর ভিকটিমের শরীর নিস্তেজ হয়ে গেলে ভিকটিম ‘মারা গেছে’ মনে করে অটোরিকশাটি পাশের জঙ্গলে লুকিয়ে রেখে পালিয়ে যায় আসামিরা। সৌভাগ্যক্রমে ভিকটিম তখনও মারা যায়নি। প্রায় দুই ঘণ্টা পর পুলিশ স্থানীয় জনতার সহায়তায় ভিকটিমকে দ্রুততম সময়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে বেঁচে আছে বলে জানান মিটফোর্ড হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার। বর্তমানে শাওন ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। ভিকটিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আসামিদের দেখানো মতে হামলায় ব্যবহৃত চাকু ও ছিনতাইকৃত অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়।
এ জাতীয় আরো খবর..