×
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৫-২৫
  • ৬৯ বার পঠিত
‘যেদিন জনগণ রাস্তায় নামবে সেদিন সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে যাবে...ইনশাআল্লাহ আগামীতে আরো বড় সুসংবাদ আসছে’ বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

আজ শনিবার (২৫ মে) দুপুরে এক অবস্থান কর্মসূচিতে দেশের অর্থনীতির অবস্থা, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি তুলে ধরে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘এই সরকার সবখানে দুর্বল। জনগণ বলেছিল, পাঁচ বছর টিকে থাকার কথা।

আমি বলি, পাঁচ বছর টেকার কোনো কারণ নাই। যদি আমরা সবাই একসঙ্গে রাস্তায় নামি সেদিন বিদায় ঘণ্টা বেজে যাবে। মানুষ তৈরি। ওই রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে।

সব পেশার মানুষ জেগে গেছে। জাগছে। ইনশাআল্লাহ আগামীতে আরো বড় সুসংবাদ পাবেন। আন্দোলনের পথে আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মোটরচালক দলের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এই অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়।

‘প্রধানমন্ত্রী কাহিনি বানাচ্ছেন’

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এই সরকার আরামে আছে। এই সরকার ভালো আছে? পরশু দিন ১৪ দলের সভাপতি উনি (শেখ হাসিনা) বলেছেন, আওয়ামী লীগ কষ্টে আছে। এই সরকার সমস্যার মধ্যে আছে। কেন? বাহানা করছেন।

আমি দেশের কোনো অংশ কারো কাছে বন্ধক দিয়ে বিক্রি করে ক্ষমতায় থাকতে চাই না। আগে যে রকম বলেছিলেন, ওরা আমার কাছে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ চেয়েছিল, আমি দেই নাই। কারা? বলেছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নাকি সেন্ট মার্টিন দ্বীপ চায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, সেন্ট মার্টিন কেন, আমরা বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জমিও চাইনি। তারপর আর সেই কথা বলেনি।’
‘এবার কাহিনি তৈরি করেছেন এক সাদা চামড়ার লোক নাকি তাকে (শেখ হাসিনা) প্রস্তাব দিয়েছেন, ওই রাখাইনদের একটা অংশ নিয়ে আর পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে নতুন একটা খ্রিস্টান রাজ্য গড়ে তুলতে হবে। সেই প্রস্তাব তাকে (শেখ হাসিনা) দেওয়া হয়েছে। আমি প্রথম বলতে চাই, আমার দেশের মাটি নিয়ে কেউ আরেকটা রাষ্ট্র করতে চায়। এ রকম কথা যে-ই বলুক আমরা তার বিরুদ্ধে আছি। কিন্তু কে বলেছে? শেখ হাসিনা…তিনবার নাকি চারবারের প্রধানমন্ত্রী। এই যে এক এমপি ছিল- তথাকথিত তিনবারের এমপি। কলকাতায় গিয়ে পিনাকি ভট্টাচার্যের কথায় জয় বাংলা হয়ে গেছে। এ রকম তথাকথিত চারবারের প্রধানমন্ত্রী কত বড় দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তি করেছেন।’

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘তার কাছে প্রস্তাবটা কে দিয়েছে? এক সাদা চামড়া বললে তো হবে না। চামড়া সাদা তো ব্রিটিশদেরও, ইউরোপিয়ানদের, কানাডিয়ানদের, জাপানিজদের। আর যদি কারো ধবলকুষ্ঠ হয় তাহলে পুরোটাই সাদা। কোন সাদা চামড়ার লোক আপনাকে এই প্রস্তাব দিয়েছে সেটা বলতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘উনি সেটা বলতে পারবেন না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই, কোন মানুষ, কোন সরকার, কোন দেশ আপনার কাছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চায়। কাহিনি বানিয়ে মনে করবেন কান্নাকাটি করব আর আপনার দুঃখে বোধ হয় সবার মন গলে যাবে আর আপনাকে বলবে, না আপনিই থাকেন, আমরা সেই বান্দা নই।’

‘আরো নিষেধাজ্ঞা আসছে’

মান্না  বলেন, ‘সরকার সমস্যায় আছে। তার তৈরি সেনাবাহিনী প্রধানের নামে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কী কারণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে? সরাসরি বলেছে, দুর্নীতির কারণে। দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যবসা পাইয়ে দিয়েছে নিজের ভাইদের। দুর্নীতির মাধ্যমে নিজের ভাই খুনের আসামিকে জেল থেকে মুক্ত করে দিয়েছে। আমার মনে প্রশ্ন হয়, ওই যে খুনের আসামিকে জেল থেকে মুক্ত করে দিল-ওটা শুধু জেনারেল আজিজ বলেছেন তাই হয়েছে। প্রেসিডেন্টের সই করতে হয়নি। যিনি তখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তাকে তার প্রধানমন্ত্রী রিকোয়েস্ট করে বলেন নাই, তাকে ছেড়ে দেন।’

‘অতএব, স্যাংশান যদি ঠিকমতো হয়, তাহলে শুধু সেনাপ্রধান খাবেন না, তৎকালীন রাষ্ট্রপতিও খাবেন। এখনকার এবং তখনকার যে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, সেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও স্যানশান খাবেন। অপেক্ষা করুন, আমেরিকার স্যাংশান দিতে হবে না। আমরাই আপনাকে স্যাংশান দেব। সেই পথ তৈরি হচ্ছে, সেই পথে মানুষ এখন যাচ্ছে।’

সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ভাবতে পারেন, একটা লোক কত ধরনের দুর্নীতি করেছে। একজনকে র‌্যাব প্রধান বানিয়েছিলেন। তার পরে পুলিশ প্রধান। তার পরে তার নামে পুরো বাহিনীরই বদনাম হয়েছে। র‌্যাব স্যাংশান খেয়েছে। এখন আবার তার নামে আমেরিকা নয়, বিদেশ নয়, দেশের মধ্য থেকে তদন্ত হচ্ছে। সব অ্যাকাউন্ট জব্দ, বন্ধ এবং তার যত সম্পত্তি আছে সব কিছু বাজেয়াপ্ত।’

‘আমার জানতে ইচ্ছা করে, বেনজীর আহমেদের কত টাকা আছে ব্যাংকে? এই যে এত দিন পর তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করলেন, কেন এত দিন সময় দিলেন? মানে মাল যা কামিয়েছে তা বাইরে ট্রান্সফার করে দেওয়ার জন্য। পত্রিকায় দেখলাম, বেনজীর ও তার পরিবারের সম্পত্তির পরিমাণ ৩৪২ বিঘা। তার ব্যাংকে কত টাকা ছিল সেটা তাদের জানবার কথা। আমি দাবি করছি তা-ও জানান। আমি দাবি করছি, কেন এত দিন পর তার নামে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো। ওই কোর্টকে জিজ্ঞাসা করুন।  দুদক যখন তদন্ত করতে চেয়েছিল তখন হাইকোর্ট কেন তদন্ত বন্ধ করেছিল, কার নির্দেশে?’

আনোয়ারুল আজীম আনারের প্রসঙ্গ টেনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম, আওয়ামী লীগ তিনটা কারণে অস্বস্তিতে আছে। আজিজ, বেনজীর এবং একজন এমপির কারণে। সে (আনোয়ারুল আজীম আনার) এমপি নাকি? জনগণ ভোট দিয়েছে? দেয় নাই।’

‘সেই এমপি, যার নামে রেড অ্যালার্ট ছিল। যার নামে খুনের মামলা ছিল। যার নামে ধর্ষণ-লুট সব ধরনের মামলা ছিল। সেই এমপি যে নিজেই বলেছিলেন, আমি প্রথমবার যখন এমপি হয়েছি তখন কয়েকটা মামলা উঠে গেছে। তারপর ধীরে ধীরে এবার এমপি হওয়ার পর আমার নামে সব মামলা উঠে গেছে। সব চোর-চোট্টা-খুনি ডাকাত মিলে আওয়ামী লীগের দল।’

জাতীয়তাবাদী মোটরচালক দলের সভাপতি সেলিম রেজা বাবুর সভাপতিত্বে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় নেতা আজমল হোসেন পাইলট, ভিপি ইব্রাহীম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat