×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৭-২০
  • ৫৬ বার পঠিত
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অর্থের লোভ দেখিয়ে কিডনি ডোনারদের প্রথমে নিয়ে আসতেন ঢাকায়। কিডনি রোগীর আত্মীয় সাজিয়ে সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাদের পাঠানো হতো ভারতে। সেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন শেষে দেশে ফিরে টাকা চাইলেই দেওয়া হতো হুমকি। কিডনি পাচারকারী এ চক্রের প্রধান শহিদুল ইসলাম মিঠুকে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

এ চক্রের আরো চার সদস্যকে রাজধানীর ভাটারা, বনশ্রী ও মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।  
আজ বুধবার (২০ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক আবদুল্লাহ আল মোমেন।

তিনি বলেন, ‘প্রতারণার মাধ্যমে মানবদেহের কিডনিসহ নানাবিধ অঙ্গের অবৈধ ট্রান্সপ্লান্টেশনের সঙ্গে সক্রিয় রয়েছে কয়েকটি চক্র। এসব চক্রের ফাঁদে প্রলুব্ধ হয়ে অসহায় ও নিম্ন আয়ের মানুষ ক্ষেত্রবিশেষে গ্রাহকরাও প্রতারিত হচ্ছে। আইনবহির্ভূত, স্পর্শকাতর ও অবৈধ ট্রান্সপ্লান্টেশনের এমন কার্যক্রমে চক্রের সদস্যরা অর্থের লোভে অমানবিক কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে র‍্যাব সাইবার মনিটরিং সেল ভার্চুয়াল জগৎ তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবৈধভাবে কিডনিসহ অন্যান্য মানব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্রয়-বিক্রয় সিন্ডিকেটের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে আসছিল। এসব সিন্ডিকেটের সদস্যরা অনলাইনে বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে গ্রাহক ও ডোনারদের আকৃষ্ট করে থাকে। ’

আবদুল্লাহ আল মোমেন বলেন, ‘ইতিপূর্বে র‍্যাবের অভিযানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিডনি কেনা-বেচা চক্রের অন্যতম হোতা ও ফেসবুক পেইজের অ্যাডমিনসহ চক্রের পাঁচ সদস্যকে আইনের আওতায় আনা হয়। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেন্দ্রিক কিডনি কেনা-বেচার অন্য চক্রগুলোকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সাইবার মনিটরিং ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায় র‍্যাব। ’

তিনি বলেন, ‘এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে  ২০ জুলাই ভোর ৫টা পর্যন্ত র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-১-এর যৌথ অভিযানে রাজধানীর ভাটারা, বনশ্রী ও মিরপুর এলাকায় কিডনি ক্রয়-বিক্রয় সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা মো. শহিদুল ইসলাম মিঠু (৪৯), মো. মিজানুর রহমান (৪৪), মো. আল মামুন ওরফে মেহেদী (২৭), মো. সাইমন (২৮), মো. রাসেল হোসেনকে (২৪)  গ্রেপ্তার করা হয়। ’

র‌্যাবের এই অধিনায়ক বলেন, অভিযানে কিডনি ক্রয়-বিক্রয় চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে বিভিন্ন ভিকটিমের সঙ্গে চুক্তির অ্যাফিডেভিড কপি, ভুক্তভোগীদের পাসপোর্টসহ মোট ১৪টি পাসপোর্ট, কিডনি ক্রস ম্যাচিংয়ের বিভিন্ন দলিলাদি, দেশি ও বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র ও ফটোকপি, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই ও এটিএম কার্ড, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের জাল সিলমোহর, খালি স্ট্যাম্প, সিপিইউ, মোবাইল ও সিম কার্ড জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিডনি কেনা-বেচা এ চক্রের মোট সদস্যসংখ্যা ১৫ থেকে ২০ জন। তারা মূলত তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে কিডনি ক্রয়-বিক্রয়ের অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এ চক্রের সদস্যরা পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থানরত কিডনি কেনাবেচা চক্রের সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে শতাধিক মানুষকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করেছে বলে জানা যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat