×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৭-০৫
  • ৪৯ বার পঠিত
অনুষ্ঠানের নাম ছিল ‘বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব’। উপজেলা সমূহের তৃণমূল শিল্পীদের অংশগ্রহণের নওগাঁ জেলা শিল্পকলা একাডেমি এই উৎসবের আয়োজন করেছিল। নওগাঁ জেলার ১১টি উপজেলা থেকে গত রোববার বিকেলে উৎসবে এসেছিলেন প্রায় ৮৫০ জন বাউলশিল্পী। অনুষ্ঠান চলে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত। দেশপ্রেম, ভক্তি ও ভালোবাসার গানে বাউলশিল্পীরা দর্শকদের মন মাতান।

বিকেলে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান। নওগাঁ জেলা শিল্পকলা একাডেমির জেলা সংস্কৃতিবিষয়ক কর্মকর্তা আসাদ সরকারের সঞ্চালনায় প্রথমে প্রতিটি উপজেলা থেকে একজন করে বাউলশিল্পী গান করেন। তারপর ৮৫০ জন শিল্পীর ভেতর থেকে বাছাই করা বাউলশিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।

নওগাঁ সদর উপজেলা থেকে এসেছিলেন সন্তোষ তরণী ও সাবিত্রী তরণী। এই দম্পতি ৬০ বছর ধরে বাউল গান চর্চা করছেন। সন্তোষ তরণী একটি যন্ত্র বাজিয়ে নাচেন আর সাবিত্রী তাঁকে ঘিরে নেচে নেচে গাইলেন, পাগল দেওয়ানা হয়েছি...। এই বাউল দম্পতির পরিবেশনায় মিলনায়তনভর্তি বাউলশিল্পীরাও যেন তাঁদের গানের দেওয়ানা হয়ে যান। শুধু এ রকম দম্পতি নন, উৎসবে যোগ দিতে এসেছিলেন একই পরিবার থেকে ১০ জন বাউলশিল্পী। গান-গল্প ও আড্ডায় ‘বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব’ শেষ পর্যন্ত জমজমাট ছিল। এক পরিবারের ১০ বাউলের প্রধান নূপুর মোহন্ত। গানের ফাঁকে আড্ডায় তিনি সপরিবার শিল্পী হওয়ার গল্প শোনালেন। বিয়ের পর তাঁর কাকিশাশুড়ি নিলকী মোহন্তের কাছ থেকে তিনি গান শিখেছেন। তারপর তাঁর কাছ থেকে শিখেছেন কেয়া মোহন্ত, গীতা রানী, দুলালী রানী, আরেক কাকিশাশুড়ি চন্দনা রানী, মান রানী, ননদ রাধা রানী, মেয়ে দুষ্টমণি ও নাতনি মেঘলা রানী। তাঁরা সবাই এসেছিলেন উৎসবে। তাঁদের বেশির ভাগই এসেছিলেন একই রঙের শাড়ি পরে।

রানীনগর উপজেলার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বাউল কিশোর যখন গলা ছেড়ে গাইছিলেন, মায়ের এক ধার দুধের দাম কাটিয়া গায়ের চাম...তখন মিলনায়তনভর্তি বাউলশিল্পী-দর্শকের অনেকেই চোখ মুছতে থাকেন।


উৎসবকে আরও মাতিয়ে তোলেন ঢুলি গুলজার। তাঁর ঢোল বাদন উৎসবে অন্য মাত্রা যোগ করে।

অনুষ্ঠানের এক ফাঁকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে মঞ্চে আসেন জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান, কবি আতাউল হক সিদ্দিকী ও নওগাঁ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শরীফুল ইসলাম খান। এত প্রতিকূলতার মধ্যে বাউলশিল্পীদের এই সাধনার জন্য তাঁরা ভূয়সী প্রশংসা করেন। নওগাঁ জেলায় নীরবে–নিভৃতে এত বাউলশিল্পী গান করেন। আর তাঁদের এক জায়গায় করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য অতিথিরা শিল্পকলা একাডেমিকে অভিনন্দন জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat