জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেছেন, একদিকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনীতে প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ অপরদিকে ব্রিজে না উঠতে আওয়ামী লীগ দলীয় এমপির পরামর্শ। এমতাবস্থায় পদ্মা সেতু পার হতে গেলে ফেলে দেওয়া হবে কিনা সেই আতঙ্কে আছি।
আজ রবিবার রাতে এই বক্তব্য দেওয়ার সময় সংসদে উপস্থিত সংসদ নেতা শেখ হাসিনাকে হাসতে দেখা যায়। এরআগে একই আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য শাজাহান খান বিএনপি নেতাদের পদ্মা সেতুতে না ওঠার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতৃবৃন্দ এখানে আছেন। দয়া করে আপনারা কেউ পদ্মা সেতু পার হইয়েন না। আপনাদের নেত্রীর নির্দেশ অমান্য করবেন না। আপনাদের জন্য আমরা নদীর পাড়ে নৌকা রেখে দেবো। সেই নৌকায় দরকার হলে আপনাদের পার করবো।
পরে বাজেটের ওপর আলোচনাকালে এর জবাব দেন হারুন। তার আগে তিনি পদ্মা সেতু তৈরি হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দেন। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই ব্রিজ উদ্বোধন করেছেন। জনগণ আজ থেকে ব্রিজ পার হচ্ছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের গৌরবের। নিজস্ব অর্থায়নে চেষ্টা করে সেতু করেছেন। এটা আমাদের গৌরবের। কিন্তু এটা নিয়ে তির্যক কথাবার্তা।
শাহাজান খানের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে হারুন বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী পদ্মা ব্রিজ উদ্বোধনের জন্য দাওয়াত দিলেন। সংসদে পদ্মা ব্রিজ নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। প্রায় একশজন সংসদ সদস্য বক্তব্য দিয়েছেন। আজকে একজন সংসদ সদস্য-শাজাহান খান আমাদের বললেন পদ্মা ব্রিজে উঠবেন না। প্রধানমন্ত্রী দাওয়াত দিচ্ছেন আর আরেকজন সংসদ সদস্য বলছেন পদ্মা ব্রিজে উঠবেন না। তাহলে আমরা কী করবো? এখানে পাশে ফিরোজ রশীদ, পেছনে নিক্সন চৌধুরী আছেন। তারা আমাদের কয়েকদিন আগে দাওয়াত দিলেন। বললেন- উদ্বোধনের পরে আমাদের বাড়িতে যাবেন। দাওয়াত দিলাম।
এ সময় স্পিকারের দায়িত্বে থাকা সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ বি তাজুল ইসলাম বলেন, সর্বোচ্চ ব্যক্তিত্বের দাওয়াতকে গ্রহণ করতে হবে।
পরে হারুন বলেন, একদিকে দাওয়াত দেবেন ওদিকে আরেকজন ভয় দেখাবেন। আমি তো আতঙ্কে আছি। পদ্মা সেতু পার হতে গেলে ফেলে দেবেন কিনা? ডুবিয়ে দেবেন কিনা? একটি ভয়ের মধ্যে আছি।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরে বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির এই এমপি বলেন, কাল দেখলাম একজন মন্ত্রী বক্তব্য দিচ্ছেন যে বিএনপির মন খারাপ পদ্মা ব্রিজ হওয়ার জন্য। না আমাদের মন খারাপ নয় স্পিকার। আমাদের মন কেন খারাপ হবে? আমরা আনন্দে আছি। আমরা মুজিববর্ষ পালন করলাম।
তিনি আরো বলেন, পদ্মা ব্রিজ উদ্বোধন করলাম। কিন্তু গুম ও খুনের যে সংস্কৃতি হয়ে গেছে। আমরা এখন থেকে বেরুতে পারবো? ভোটের অধিকার যে হারিয়ে ফেলেছি সেটা কী পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারবো? প্রধানমন্ত্রীকে বলবো এদিকে দৃষ্টি দেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। যতই পদ্মা ব্রিজের স্বপ্ন দেখান আর মেট্রো রেলের স্বপ্ন দেখান মানুষের পেটে খাদ্য চাই। মানুষ দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে আছে। মানুষ বাঁচতে চায়।
এ জাতীয় আরো খবর..