দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে মুরগির দাম কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়। আর সোনালি মুরগি কেজিতে ২৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। এই সময়ে মুরগির দাম কমলেও বেড়েছে পেঁয়াজ, আলু ও বিভিন্ন সবজির দাম।
পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা, আলু কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বন্যার কারণে বাজারে সরবরাহ কমায় বেশ কিছু সবজির দাম কেজিতে পাঁচ থেকে দশ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
গতকাল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা, যা গত দুই সপ্তাহ আগে ছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ২৫০ টাকা, যা গত দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছিল ২৭৫ টাকা। বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে দেশি মুরগি, গরু ও খাসির মাংসের দাম। দেশি মুরগি ৫৩০ থেকে ৫৫০ টাকা, গরু ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা, খাসির মাংস ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী বাজারে মুরগির দাম কিছুটা কমায় ক্রেতারা খুশি। তবে কোনো কারণ ছাড়া বাজারে হঠাৎ পেঁয়াজ ও আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার চিকেন মার্কেটের মেসার্স মা আয়েশা ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজারে বর্তমানে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির সরবরাহ প্রচুর। বন্যার কারণে খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন। চাহিদার চেয়ে সরবরাহ বেশি হওয়ায় বাজারে মুরগির দাম বেশ কমেছে। ’
তিনি বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করেছি ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। বর্তমানে বিক্রি করছি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। সোনালি মুরগিও কেজিতে ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমে বর্তমানে ২৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বন্যার কারণে খামারিরা ঝুঁকি এড়াতে মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন। এ কারণে ঈদের পর বাজারে মুরগির সংকট দেখা দিতে পারে। ’
কারওয়ান বাজারে চিকেন মার্কেটের বাংলাদেশ চিকেন ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী মো. ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজারে বর্তমানে মুরগির দাম অনেক কম। এর পরও বিক্রির পরিমাণ কম। ঈদের আগে আগে মুরগির দাম আরো কমতে পারে। ’
জোয়ারসাহারা বাজারের মাসুম চিকেন হাউসের ব্যবসায়ী মো. দুলাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বন্যার কারণে খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন। এ কারণে বাজারে মুরগির দাম কম। আমরা এখন ব্রয়লার কেজি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা এবং সোনালি ২৫০-২৫৫ টাকা কেজি বিক্রি করছি। ’
এদিকে কারওয়ান বাজার কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী রবিউল আওয়াল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বন্যার কারণে প্রতিদিনই সবজির দাম বাড়ছে। বাজারে এখন আগের তুলনায় সবজির সরবরাহ কম। গত এক দিনের ব্যবধানে শসা, বেগুন, টমেটু, করলা, কাঁকরোল ও কাঁচা মরিচ খুচরায় কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘খুচরায় বেগুন ৬০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, টমেটু ১৮০ টাকা, কাঁকরোল ও করলা ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া পটোল, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, গাজর দেশি ৬০ টাকা, গাজর চায়না ১৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, লতি ৫০ টাকা, কুমড়া পিস ৪০ টাকা, লাউ ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ’
জোয়ারসাহারা বাজারের সবজি বিক্রেতা আলম হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বেগুন কেজি ৮০ টাকা, টমেটু ১৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পটোল ও কাঁকরোল ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা ও শসা ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ’
ওই বাজারের মেসার্স ভাই ভাই স্টোরের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে পেঁয়াজ ও আলুর দাম বাড়লেও রসুন ও খোলা আটার দাম কমেছে। পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকায়, আলু পাঁচ টাকা বেড়ে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে দেশি রসুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আমদানি রসুন ৯০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা আটা কেজিতে ১০ টাকা কমে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাল, ডাল, ডিমসহ অন্য নিত্যপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ’
এ জাতীয় আরো খবর..