প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের ‘অশালীন বক্তব্য ও হত্যার হুমকি’র প্রতিবাদে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। আজ বুধবার থেকে আগামী ১০ জুন পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে ক্ষমতাসীনরা। গতকাল মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের এক যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
যৌথ সভায় উপস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা কালের কণ্ঠকে জানান, আগামী ৪ জুন ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ।
আজ বুধবার বিকেল ৪টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে মহিলা আওয়ামী লীগ। আগামীকাল বৃহস্পতিবার যুব মহিলা লীগ এবং ৪ জুন কৃষক লীগের আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে। ৮ জুন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ এবং ১০ জুন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ সমাবেশ করবে।
যৌথ সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। উপস্থিত ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহ্মুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজিত রায় নন্দী, বিপ্লব বড়ুয়া, নজিবুল্লাহ হিরু, আবদুস সবুর, আমিনুল ইসলাম আমিন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম প্রমুখ। সভায় আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সূচনা বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি মনে করেছে ছাত্রদলকে দিয়ে ক্যাম্পাসে অরাজকতা করবে। তারা পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার স্লোগান দেবে, নেত্রীকে হত্যার হুমকি দেবে, আর আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি, তারা কি বসে আঙুল চুষব? যারা ছাত্ররাজনীতি করে তারা কি চুপ করে বসে থাকবে? এই কথা বললে তরুণদের মাথা ঠিক থাকে?’
বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে তারা কর্মসূচি পালন করুক। সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিক, কোনো আপত্তি নেই। তারা সরাসরি শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে, আমরা বসে বসে তামাক খাব? তাদের (ছাত্রলীগ) রক্ত গরম হবে না? মির্জা ফখরুল সাহেব, আগুন নিয়ে খেলবেন না। আমরা হাত গুটিয়ে বসে থাকব না। আগুন নিয়ে খেললে পরিণতি হবে ভয়াবহ। ’
বিএনপিকে সাবধান করে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা (বিএনপি) ছাত্রদলকে দিয়েই নাকি ক্যাম্পাস থেকে আন্দোলন শুরু করবে। আমরাও দেখব কত ধানে কত চাল। সব কিছুর একটা শেষ আছে। বাড়াবাড়ি ভালো নয়। ’ দলের নেতাকর্মীদের এ ব্যাপারে প্রস্তুত হতে আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
সভায় বিএনপি ও এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সাম্প্রতিক কর্মসূচিগুলো ও সেখানে নেতাদের বক্তব্য নিয়ে আলোচনা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হতে পারে সে জন্য ছাত্রলীগকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ নেতারা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষাসহ অন্যান্য পরীক্ষা এবং শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় যেন ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকে খেয়াল রেখে কর্মসূচি পালন করতে ছাত্রলীগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
৭ জুন ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস, ১১ জুন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস, ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি এবং ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন দিনের কর্মসূচি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পালন করার বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়।
এ জাতীয় আরো খবর..