বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, জিয়াউর রহমানের স্লোগান ছিল 'বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, কোনো প্রভু নাই'। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকা, রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক নানা দিক তুলে ধরতে গিয়ে আজ রবিবার এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে তার উল্লেখযোগ্য বিষয় নিয়ে সাক্ষাৎকারভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরে সংযুক্ত) তারিকুল আলম তেনজিংয়ের পরিচালনায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকন, আব্দুস সালাম আজাদ, সরাফত আলী সপু, সাইফুল আলম নিরব, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, তাইফুল ইসলাম টিপু, রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ।
এ সাক্ষাৎকারভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্রের সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন স্বপ্নদ্রষ্টা। তিনি দূরে দেখতে চেষ্টা করতেন। দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি দেশ নিয়ে সার্ক গঠন- এটা জিয়াউর রহমানের স্বপ্ন ছিল। তিনি মনে করতেন, একটি কালেকটিভ লিডারশিপ গড়ে তোলা গেলে কর্তৃত্ববাদী দেশগুলোর প্রভাব কমে যেত। বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, এই আঞ্চলিক শক্তি গড়ে উঠতে পারেনি বলেই দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি ঘুরপাক খাচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধের পর ভবিষ্যতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়ও বিশ্বের শক্তিশালী মোড়ল দেশগুলো মাথা ঘামাবে এবং তখন আমরা অত্যন্ত ঝুঁকির সম্মুখীন হব।
মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা থেকে শুরু করে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জিয়াউর রহমানের কর্মময় নানা দিক তুলে ধরে গয়েশ্বর বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা থেকে শুরু করে দেশ স্বাধীন করা পর্যন্ত এবং পরবর্তী সময়ে বাকশাল নামক একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও শাসনব্যবস্থায় ফিরিয়ে দিতে জিয়াউর রহমানের সাহসী ভূমিকা দেশের সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। এ জন্য তাকে দেশের মানুষ তাদের হৃদয়ে স্থান দিয়েছে। এ কারণেই জিয়াউর রহমানকে শ্রেষ্ঠ করতে কারো সঙ্গে তুলনা করতে হয় না, কাউকে ছোটও করতে হয় না। তার কর্মের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তার তুলনা তিনি নিজে। আমরা যেন ভুল করে অন্য কারো সঙ্গে জিয়াউর রহমানকে তুলনা করতে না যাই।
গয়েশ্বর বলেন, জনগণ যে প্রত্যাশা নিয়ে জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসিয়েছিল, অতি অল্প সময়ের মদধ্যে জনগণের সে প্রত্যাশা পূরণ করতে তিনি সক্ষম হয়েছিলেন, জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে এনেছিলেন। এমনকি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও তিনি বেশ সুনাম কুড়িয়েছিলেন। ইরাক-ইরান যুদ্ধে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জিয়াউর রহমান সর্বকালের একজন সর্বশ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিক, দূরদর্শী রাজনীতিবিদ, সর্বশ্রেষ্ঠ সংগঠক। রাষ্ট্র পরিচালনায় সাংগঠনিক যে দক্ষতা দরকার- এটি অল্প সময়ের মধ্যে জিয়াউর রহমান করতে পেরেছিলেন। পূর্বপরিকল্পনা ছাড়াই স্বল্প সময়ের মধ্যে একটি মুক্তিযুদ্ধে সবাইকে মাঠে নামাতে পেরেছিলেন এবং সম্মুখভাগে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, জিয়াউর রহমান বেকার সমস্যা দূর করতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিক তৈরি করে তা রপ্তানির ব্যবস্থা করেছিলেন। যার রেমিট্যান্স এখন আমরা পাচ্ছি। বিদেশে শ্রমিক ও পোশাকশিল্পের রেমিট্যান্স দিয়েই বাংলাদেশ টিকে আছে। এটাই হলো জিয়াউর রহমানের দূরদর্শিতা। খাল খনন কর্মসূচি পালন করে সারা দেশে কৃষিক্ষেত্রে জিয়াউর রহমান অভূতপূর্ব সাফল্য এনেছিলেন বলে উল্লেখ করেন গয়েশ্বর।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জিয়াউর রহমানের সততা ও দেশপ্রেম নিয়ে কেউ কখনো প্রশ্ন তুলতে পারেনি। তিনি ছিলেন স্বজনপ্রীতির ঊর্ধ্বে।
এ জাতীয় আরো খবর..