ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ওপরে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলার পরিণতি শুভ হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
শুক্রবার (২৭ মে) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই হুঁশিয়ারি দেন। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হামলার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।
তিনি বলেন, ‘আজকে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের লাঠি দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে, সমর্থন দিয়ে তাদের (ছাত্রলীগ) লেলিয়ে দিচ্ছেন, আপনারা (ক্ষমতাসীনরা) আপনাদের কথা চিন্তা করেন।
যারা করছে তাদের পরিণতি কী হবে, অতীতে আমাদের কাছে বহু উদাহরণ রয়েছে। এর পরিণতি শুভ হবে না। ’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আপনারা (সরকার) কেন এ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছেন এটা সবাই জানে। শেখ হাসিনার সরকার চতুর্দিকে ঘেরাও হয়ে গেছে, আন্তর্জাতিকভাবে তারা বিচ্ছিন্ন, আন্তর্জাতিকভাবে তারা সমর্থনশূন্য, এ দেশের মানুষ তাদেরকে (সরকার) প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের আর কোনো পথ নাই, তাদের পথ চতুর্দিকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। '
‘তখন তারা এই গুণ্ডামি ও সন্ত্রাসের পথ বেঁছে নিয়েছে। কারো যদি জনসমর্থন থাকে, গণতান্ত্রিকভাবে পায়ের নিচে মাটি থাকে, তাহলে এ রকম গুণ্ডামি ও সন্ত্রাসীর পথে কেউ যায় না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছে। সারা বাংলাদেশে তারা আন্দোলনের সূচনা করেছে। সারা দেশে এই আন্দোলন হবে। কয় জায়গায় আপনারা এই সন্ত্রাসীদের পাঠাতে পারবেন?’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এ দেশের মানুষের সন্তান, তাদের অভিভাবকরা আজ প্রস্তুত হচ্ছে। বিএনপিসহ যত অঙ্গসংগঠন আছে তারা প্রত্যেকে ছাত্রদলের ভাই অথবা অভিভাবক। তাই অভিভাবকরা কেউ বসে থাকবে না। ’
‘ছাত্রদল রাস্তায় আন্দোলন শুরু করেছে। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, আজকে যে দেশের সংকট তার সমাধান হবে রাজপথে। আর ছাত্রদল রাজপথে সেই আন্দোলনের সূচনা করে ফেলেছে। সেই আন্দোলনকে আগামী দিনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, এ দেশে যারা গণতান্ত্রিক শক্তি, দেশপ্রেমিক তারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। ’
‘ইভিএমে ভোট চলবে না’
খন্দকার মোশাররফ হোসেন সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আজ আমাদের একটি দাবি- যদি দেশকে শ্রীলঙ্কার মতো দেখতে না চান তাহলে এই গায়ের জোরের সরকারকে বলব, আপনারা অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করুন। সংসদ ভেঙে দিন এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করুন। সেই সরকারই খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যবস্থা করবে এবং আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরে এসে রাজনীতি করার পরিবেশ সৃষ্টি করে দেবে। সেই নিরপেক্ষ সরকার এ দেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করবে। ’
‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যে ভোট হবে, সেখানে ইভিএমে ভোট চলবে না। নিজের হাতে ভোট দিয়ে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। ’
পদ্মা সেতুর ওপর থেকে খালেদা জিয়াকে ফেলে দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর উক্তির সমালোচনা করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজ যিনি প্রধানমন্ত্রী তার ঘুম হয় না। ঘুম হয় না বলেই এই প্রধানমন্ত্রী বলতে পারেন তিন-তিনবারের প্রধানমন্ত্রী এ দেশের গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতুর ওপর থেকে টুস করে ফেলে দেবেন। এই কথা একজন সুস্থ ব্যক্তি কখনো বলতে পারেন না। ’
‘এই প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পদ্মা নদীতে দুইবার চুবিয়ে উঠিয়ে ফেলবেন। মেরে ফেলবেন বলেন নাই। বাঁচিয়ে দেবেন বলেছেন। আর দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ওই নদীতে ফেলে দেবেন বলেছেন। অর্থাৎ এখানে আপনি (শেখ হাসিনা) হত্যার হুমকির অভিযোগে অভিযুক্ত। ’
মহানগর উত্তরের সভাপতি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্যসচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় সমাবেশে বিএনপির আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, আবদুস সালাম আজাদ, নাজিম উদ্দিন আলম, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী, কামরুজ্জামান রতন, শিরিন সুলতানা, মীর সরফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, শামীমুর রহমান শামীম, রাজিব আহসান, হাসান জাফর তুহিন, সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, হেলেন জেরিন খানসহ মহানগর নেতারা বক্তব্য দেন।
এ জাতীয় আরো খবর..