বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শ্রীলঙ্কার (গণবিক্ষোভের মুখে সদ্যোবিদায়ি প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে সরকারের) শিক্ষা নিয়ে সরকারের লাভ হবে না। তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) শিক্ষা নিতে জানে না। তাহলে তারা গত ১০ বছরে শিক্ষা নিত। শ্রীলঙ্কার চেয়েও তাদের (আওয়ামী লীগ সরকারের) খারাপ অবস্থা হবে।
আজ মঙ্গলবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের যৌথ সভা শেষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য প্রসঙ্গ জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওবায়দুল কাদেরকে বিএনপিতে যোগ দিয়ে বিএনপির দায়িত্ব নিতে বলেন। বিএনপির বক্তব্য তিনি কিভাবে দেন তা আমরা জানি না। আমরা তো স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি, বর্তমান অবৈধ শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। এর ভেতরে কোনো ফাঁকফোকর কিচ্ছু নেই। এই সরকারকে যেতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এরপর নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হবে। ’
ইভিএম প্রসঙ্গ তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন জবাব দিয়ে দিয়েছে। আমার কিছু বলার আছে বলে মনে হয় না। এই সরকার নির্বাচনকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করে- এটা প্রমাণিত হয়েছে। তা না হলে প্রধানমন্ত্রী কিভাবে বলেন ৩০০ আসনে ইভিএমে নির্বাচন হবে? এর দায়িত্ব তো সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের। ’
এদিকে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাদের ওপর ক্ষমতাসীন দলের হামলার প্রতিবাদে আগামী ১২ ও ১৪ মে বিএনপির পক্ষ থেকে দুই দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, কয়েক দিন ধরে সারা দেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপির সিনিয়র নেতারা থেকে শুরু করে অন্যান্য বিরোধী দলের নেতাদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে একটা সন্ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। কুমিল্লার দাউদকান্দিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ওপর হামলা ও তার বাসভবনে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের আক্রমণ এবং পরবর্তী সময়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, 'একই সঙ্গে কুমিল্লার চান্দিনায় এলডিপি মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী রেদোয়ান আহমেদের গাড়িতে হামলা ও তাকে গ্রেপ্তার, ফেনীতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবেদীনের ওপর হামলা, পটুয়াখালীর সদস্যসচিব শুধাংসু সরকার কুট্টির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেওয়াসহ সাতক্ষীরা, নারায়ণগঞ্জ, পটুয়াখালীর নেতাদের ওপর হামলা করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এসব সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে আগামী ১২ মে ঢাকা মহানগরে এবং ১৪ মে সারা দেশে জেলাপর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। '
বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে যৌথ সভায় আরো অংশ নেন বিএনপির রুহুল কবীর রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু, তারিকুল ইসলাম তেনজিং, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, হেলেন জেরিন খান, মহানগর বিএনপির আমিনুল ইসলাম, যুবদলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেন, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাইদ আহমেদ খান, শফিকুল ইসলাম চৌধুরী মিলন, তাঁতীদলের আবুল কালাম আজাদ, মজিবুর রহমান, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, উলামা দলের নজরুল ইসলাম তালুকদার, সেলিম রেজা, জাসাসের লিয়াকত আলী, জাকির হোসেন রোকন, ছাত্রদলের কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।