জাতির পিতার ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীতে মশাল মিছিল করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা। ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ নামের সংগঠনটির নেতাকর্মীরা আজ রবিবার সন্ধ্যায় মানিক মিঞা এভিনিউয়ের টিঅ্যান্ডটি থেকে ‘আলোর মিছিলের’ যাত্রা শুরু করেন। মিছিলটি শেষ হয় ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে এসে।
মশাল মিছিলের পূর্বে বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ‘আমরা দেশ স্বাধীন করে দিয়েছি।
এবার বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তির আন্দোলনে তোমাদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। ’
তিনি বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, স্বাধীনতার সেই বিরোধী অপশক্তি, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী এবং ১৯৭১ সালে যারা মানুষ হত্যা করেছে তারা কিন্তু বসে নেই। তারা এখন বিষধর সাপের ফণা তুলছে। বারবার ছোবল দেওয়ার চেষ্টা করছে। এবার হত্যা করার চেষ্টা করেছে আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে। তারা বারবার চেষ্টা করেছে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে। তারা চেষ্টা করেছে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে; কিন্তু পারেনি। ’
শাজাহান খান বলেন, এখনো তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, রাজাকারদের ক্ষমতায় বসাতে ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি বলেন, ‘যারা আজকে আমাদের এই স্বাধীনতার বিপক্ষে কথা বলছেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সঙ্গে ছিলেন না, যারা বলেন খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধা, তারেক রহমান শিশু মুক্তিযোদ্ধা, এর চাইতে উন্মাদ আর কী হবে আমি জানি না। উন্মাদের মতো কথা বলেন, আপনাদের ভাবতে হবে শিশু মুক্তিযোদ্ধা বলতে কী বোঝায়। আর আপনারা কী বোঝান আমি জানি না। এই কথাটি যিনি বলেছেন তিনি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে তিনিই তো মুক্তিযোদ্ধা নন। তিনিই তো স্বাধীনতাবিরোধীর একজন সন্তান। সুতরাং তিনি এ কথা বলতেই পারেন। কিন্তু যারা সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধা তারা এ কথা বলতে পারেন না। ’
শাজাহান খান বলেন, ‘এমন মনে করার কোনো কারণ নেই যে আমরা রাজপথ ছেড়ে দিয়েছি, রাজপথ আপনাদের দখলে। আমরা পরিষ্কার বলতে চাই, আমরা শ্রমিক, কৃষক, পেশাজীবী, ছাত্র-জনতা, মুক্তিযোদ্ধা কেউ বসে নেই। আমরা মাঠে লড়াই করব আপনাদের সাথে। আর এই লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েই আপনাদের নিশ্চিহ্ন করব। ’
দলের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, ‘যারা ১৯৭৫-এর উত্তরাধিকার, যারা একাত্তরের রাজাকার, আলবদর, আলশামস, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর উত্তরাধিকার, যারা রাষ্ট্রদ্রোহী তারা আবার রাজপথে শামিল হতে চাইছে। ’
তিনি বলেন, ‘আমরা বীরের সন্তান। আমাদের আছে বীরত্বের ইতিহাস। আমরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করেছিলাম। আমরা আবারও শপথ করতে চাই। যুদ্ধাপরাধীদের যে বিচারকাজ চলছে, একজন যুদ্ধাপরাধীও বেঁচে থাকলে আমরা এই বিচারকার্য থেকে বিরত হব না। যারা বিদেশে আছে তাদের দেশে এনে বিচারকার্য সম্পন্ন করব। ’
সভাপতির বক্তব্যে মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আজকে নানা যড়যন্ত্র, চক্রান্তের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের যে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ৩০ পারসেন্ট কোটা সংরক্ষণ করা হয়েছিল সেটি বাতিল করা হয়েছে। আমি মনে করি সেটি আবারও বহাল করা প্রয়োজন। ’
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক মিয়াসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত থেকে আলোর মিছিল কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।
মিছিলপূর্ব সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মো. সাজ্জাদ হোসেন ও পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান শাহীন।
এ জাতীয় আরো খবর..