ক্ষুধার যন্ত্রণায় ডুকরে কাঁদছিল ছয় বছরের মেয়ে সাদিয়া। কিন্তু ঘরে চাল ছাড়া কিছুই ছিল না। তাই সন্তানের পাতে খাবার তুলে দিতে প্রতিবেশীর বাড়িতে ‘শাক’ চাইতে গিয়েছিলেন মা জেসমিন আক্তার (৩০)। কিন্তু সেখানে গিয়ে দুর্ঘটনাবশত আগুনে পুড়ে মারাত্মক দগ্ধ হন তিনি।
আগুনে তার পা, কোমরসহ শরীরের পেছনের অংশ পুড়ে যায়। এখন অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে অসহ্য যন্ত্রণায় দিন কাটাচ্ছেন তিনি।
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়নের তিলাবাদুরী গ্রামে গত ২৭ জুলাই এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধ জেসমিন ওই গ্রামের মফিজ প্রামাণিকের স্ত্রী।
পেশায় দিনমজুর মফিজ বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর প্রতিবেশীদের সহায়তায় জেসমিনকে নওগাঁ সদর হাসাপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু টাকার অভাবে পরদিনই তাকে বাড়িতে নিয়ে আসি। বাড়িতে আনার পর গ্রামের এক কবিরাজের পরামর্শে জেসমিনের চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু দিন দিন জেসমিনের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। পরে গত ১০ জুন তাকে আবারও নওগাঁ সদর হাসাপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর গ্রামের মানুষের সহায়তায় তাকে রাজশাহী নিয়ে এসেছি। কিন্তু ওষুধ তো দূরে থাক রোগীকে তিন বেলা খাবার কিনে দেওয়ারও সামর্থ্য নেই আমার। তাই আমার স্ত্রীকে বাঁচাতে সমাজের সামর্থ্যবান মানুষের সাহায্য খুবই প্রয়োজন। ’
দগ্ধ জেসমিন বলেন, ‘ওই দুপুরে ঘরে চাল ছাড়া রান্নার আর কিছুই ছিল না। কিন্তু ছোট মেয়েটা শুধু ভাত খেতে চায় না, কান্নাকাটি করে। তাই তার জন্য প্রতিবেশী নুরুল ইসলামের বাড়িতে পুঁইশাক নিতে গিয়েছিলাম। ওই সময় ওই বাড়ির আঙিনায় ময়লা-আবর্জনা পোড়ানো হচ্ছিল। সেই আগুন থেকেই দুর্ঘটনাবশত আমার শাড়িতে আগুন লেগে যায়। পরে আমার চিৎকারে আশপাশের মানুষ এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে। কিন্তু তার আগেই শরীরের অনেক জায়গা পুড়ে গেছে। ’
নুরুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর তাৎক্ষণিক জেসমিনকে হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়াসহ প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র কিনে দিয়েছি। এ ছাড়া আমিসহ গ্রামের অন্য মানুষও সাধ্যমতো তাকে সহায়তা করেছি। কিন্তু সেটাও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তাই জেসমিনের উন্নত চিকিৎসার জন্য সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানাচ্ছি। দগ্ধ জেসমিনের জন্য তার স্বামী মফিজের বিকাশ নম্বরে ০১৭৬৩৩৯২০৬৬ অর্থ সহায়তা দিতে পারেন তারা। এতে হয়তো সঠিক চিকিৎসা নিয়ে দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠবে জেসমিন। ’
এ জাতীয় আরো খবর..