সাকিব আল হাসানকে ঘিরে সর্বশেষ বিতর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান।
আপনি তো সাকিব আল হাসানের চিঠির অপেক্ষায় ছিলেন। সেই চিঠি নাকি পেয়েছেন?
নাজমুল হাসান: হ্যাঁ, পেয়েছি।
চিঠিতে সাকিব কী লিখেছেন?
নাজমুল: বেটউইনারের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করবে বলে জানিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে এ-সংক্রান্ত পোস্ট সরিয়ে নেওয়ার কথাও বলেছে। জাতীয় দলের হয়ে মনপ্রাণ দিয়ে খেলার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।
এখন আপনারা কী করতে যাচ্ছেন? সাকিবই কি টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক হচ্ছেন?
নাজমুল: এখনই চূড়ান্ত কিছু বলতে চাইছি না। সাকিব ১২ তারিখ (আজ) রাতে দেশে আসছে। ১৩ তারিখ সকালে ওর সঙ্গে বসব। টেলিফোনে তো আর এত কথা বলা যায় না। সামনাসামনি বসে ওর সঙ্গে কথা বলব।
বেটউইনার-বিতর্কে শুরু থেকেই আপনি কড়া এবং পরিষ্কার অবস্থান নিয়েছেন। এই ঘটনা প্রথম জানার পর আপনার প্রতিক্রিয়া কী ছিল?
নাজমুল: আই ওয়াজ শকড। এটা মেনে নেওয়া খুব কঠিন। ওকে আমরা টেস্ট ক্যাপ্টেন করলাম, টি-টোয়েন্টি ক্যাপ্টেন করব বলে ঠিক করলাম...আর ও কিনা এমন একটা কাণ্ড করল! কোনো সাবেক খেলোয়াড় এমন করলে তা-ও না হয় একটা কথা ছিল। বর্তমান খেলোয়াড় হয়ে ও কীভাবে এটা করে? এটা তো আমাদের দেশের আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। সংবিধানেও এটা পরিষ্কার লেখা আছে। ব্যক্তিগতভাবে আমার খুব খারাপ লেগেছে। ওকে নিয়ে এত কিছু চিন্তা করছি, আর ও কিনা...
সাকিবকে নাকি দুই বছরের জন্য টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক করার কথা ঠিক করে ফেলেছিলেন...
নাজমুল: দীর্ঘমেয়াদি একটা পরিকল্পনা তো ছিলই। সামনে ওয়ার্ল্ড কাপ। আমি ভেবেছিলাম, এক-দেড় বছরের মধ্যে সাকিব টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি দলটাকে একটু গুছিয়ে দেবে। ২০২৪ সাল আসতে আসতে আমরা একটা কাঠামো দাঁড় করিয়ে ফেলতে পারব।
সাকিবকে নিয়ে এখনো কি সেই পরিকল্পনাই করছেন?
নাজমুল: আগে ওর সঙ্গে বসি। জানা দরকার, কেন ও এমন একটা কাজ করল। বিসিবির আইন, আইসিসির আইন, দেশের আইন...সব আইনেও এটা নিষিদ্ধ। সাকিবের এটা জানা না থাকার কথা নয়। আমার তাই জানা দরকার, ও কী ভেবে এটা করল। এটা কি টাকার জন্য করেছে? তা-ই যদি হয়, তাহলে সামনে তো আরও বেশি টাকার অফার পাবে। তখন কী করবে?
সাকিবের ব্যাখ্যা যদি আপনার কাছে সন্তোষজনকও মনে হয়, তারপরও তো এমন কাউকে অধিনায়ক করা নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে প্রশ্ন উঠতে পারে। বিশেষ করে সাকিব যেখানে এর আগে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার কথা না বলায় এক বছর নিষিদ্ধ হয়েছেন...
নাজমুল: এবার হয়তো ওকে বেনিফিট অব ডাউট দেব। তবে আপনাকে এটা বলে দিতে পারি, এটাই হবে ওর জন্য শেষ সুযোগ। ওকে অবশ্যই কড়া নজরদারিতে রাখা হবে। ভবিষ্যতে এমন কিছু হলে আমি কারও সঙ্গে আর আলাপ করব না। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলব। আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই, আমাদের সিনিয়র প্লেয়ার যারা আছে, তারা ভালোভাবে শেষ করুক। তাই বলে বারবার তাদের সুযোগ দেওয়া হবে না।
‘এমন কিছু’ বলতে কি শুধু ‘বেটিং বা ফিক্সিং’য়ের সঙ্গে সংস্রব বোঝাচ্ছেন, নাকি যেকোনো শৃঙ্খলাভঙ্গের ক্ষেত্রেই এটা সাকিবের শেষ সুযোগ?
নাজমুল: সবকিছুই।
শেষ প্রশ্ন, এত কিছুর পরও সাকিবকেই অধিনায়ক করতে হচ্ছে কেন?
নাজমুল: উপায় নাই। লিটন দাস বা সোহান (নুরুল হাসান) ঠিক থাকলে ওদের কাউকেই হয়তো দিয়ে দিতাম। ওরা দুজনই তো ইনজুরড। আজকের (বৃহস্পতিবার) মিটিংয়েও এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মোসাদ্দেক, রিয়াদ, বিজয়ের নাম এসেছে। সিনিয়রদের মধ্যে তো ওদের নামই আসে। ইয়াংদের মধ্যে তো কেউ রেডি না। মেহেদী হাসান মিরাজ যদি টি-টোয়েন্টি টিমে থাকত, ওকে হয়তো দেওয়া যেত।
এ জাতীয় আরো খবর..