দেশের লজিস্টিক খাতের উন্নয়ন করা গেলে বিদ্যমান রপ্তানি আরো ২০ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন এ খাতের বিশেষজ্ঞরা। এ জন্য বন্দরে কনটেইনার জট কমানো, লজিস্টিক খরচ কমানোসহ বাণিজ্যিক পরিবহনে দক্ষতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
‘বাংলাদেশের লজিস্টিক খাত সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। গতকাল বুধবার রাজধানীর শেরাটন হোটেলে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আমেরিকান চেম্বাব অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) এই আলোচনাসভার আয়োজন করে।
অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদের সভাপতিত্বে এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (আইইউবি) স্কুল অব বিজনেসের মো. মামুন হাবিব।
অর্থনীতিবিদ পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাশরুর রিয়াজের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ফ্রেট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফা) সভাপতি কবির আহমেদ, বাংলাদেশ সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট সোসাইটির (বিএসসিএমএস) সভাপতি নকীব খান প্রমুখ।
পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাশরুর রিয়াজ বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে পাঁচ হাজার ২০০ কোটি ডলার। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর সংস্কার করা গেলে রপ্তানি আয় আরো বাড়ানো সম্ভব। তিনি এ জন্য বন্দরে কনটেইনার জট, লজিস্টিক খরচ কমানোসহ বাণিজ্যিক পরিবহনে দক্ষতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
মূল প্রবন্ধে মো. মামুন হাবিব বলেন, বৈশ্বিক লজিস্টিক সূচক বৈশ্বিক অবস্থানের দিক থেকে চারটি ফ্যাক্টরস অনুসারে বাংলাদেশ ৩৯তম। এতে আইসিডি এবং আইসিডি নিরাপত্তা বাড়ানো চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান অবস্থা আরো উন্নত করা এবং আইসিডি বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন। এ ছাড়া বিমানবন্দরের সুবিধা আরো বৃদ্ধি করা যায় এমন এসব বিষয় উঠে এসেছে। এ জন্য তিনি অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ তৈরির ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন। এ ছাড়া তদারকি সংস্থাগুলো দক্ষতা উন্নয়নেও গুরুত্ব দেয়।
প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অটোমেশন এবং প্রযুক্তিনির্ভর অবকাঠামো উন্নয়ন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) ব্লক চেইনের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা তুলে ধরা হয়েছে।
এনবিআরসহ তদারকি সংস্থাগুলোকে নিয়মিত নজরদারির আওতায় আনার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বমানের কাজের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হলে কর্মকর্তাদের কাজের সক্ষমতা নিয়মিত পর্যালোচনা করাসহ আইসিটি এবং চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বাড়াতে হবে।
নকিব খান বলেন, দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের দ্রুত অগ্রগতি হলেও কিন্তু আমাদের কিছু ইস্যু আছে, যেগুলো দ্রুত সমাধান করা দরকার। এর মধ্যে বিদ্যমান নীতি সংস্কার জরুরি।
প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া থেকে অনেক পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে চট্টগ্রামে পণ্য জাহাজীকরণ সময় (লিড টাইম) এবং খরচ ব্যবস্থাপনায় অন্য দেশগুলো থেকে অনেক পিছিয়ে। একই সময়ের ভিয়েতনাম-বাংলাদেশ প্রতিযোগী দেশ হলেও রপ্তানিতে ফারাক অনেক। তাই লজিস্টিক ইস্যুতে গুরুত্ব দেওয়া না হলে বাংলাদেশকে আরো পিছিয়ে পড়তে হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..