জিম্বাবুয়ে সফরের জন্য ঘোষিত বাংলাদেশের ওয়ানডে দলটায় অভিজ্ঞতার ছড়াছড়ি দেখতে পাবেন। কিন্তু টি-টোয়েন্টি দলের ছবিটা উল্টো। তারুণ্যের ভিড় লেগেছে সেখানে। ২০ ওভারের খেলায় বাংলাদেশের সামগ্রিক পারফরম্যান্সের কারণে ক্রিকেট বোর্ড এই সংস্করণে দলটাকে বদলাতে চেয়েছে। সে জন্য মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিমদের মতো অভিজ্ঞদের টি-টোয়েন্টি দলে না রেখে দল সাজিয়েছে নির্বাচকেরা।
শুধু তা–ই নয়। দলকে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার পূর্ণ স্বাধীনতাও দেওয়া হয়েছে। সেই চেষ্টায় যদি বাংলাদেশ দল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরেও যায়, তাতেও আপত্তি নেই ক্রিকেট বোর্ডের। আজ রাজধানীর একটি হোটেলে ক্রিকেটারদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের পর এ কথা বলেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ।
ওয়ানডে ও টেস্ট ক্রিকেটে অভিজ্ঞদের দলে রাখার প্রসঙ্গ টেনে খালেদ মাহমুদ বলছিলেন, ‘আমাদের ওয়ানডে দল আমরা স্পর্শই করতে পারব না, সেখানে পারফরম্যান্স ভালো হচ্ছে। এখানে কোনো পরীক্ষা–নিরীক্ষার অবকাশ নেই। টেস্ট ক্রিকেট, আমি মনে করি অভিজ্ঞদের জায়গা। একটা মাত্র ফরম্যাট, যেখানে নতুন কাউকে দেখতে পারি, সেটা হলো টি-টোয়েন্টি। সত্যি বলতে, জিম্বাবুয়েতে যদি আমরা ৩-০ ব্যবধানে হেরে যাই, তবু আমি বিন্দুমাত্র আপসেট হবে না। কারণ, আমি এই চাপ ওদের দিতেই চাই না। আমি চাই ওরা ফ্রিডম নিয়ে খেলুক, ফ্রি হয়ে খেলুক। ওদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ কী আছে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আমরা টি-টোয়েন্টির মতো খেলতে পারি কি না, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
মাহমুদের দৃষ্টিতে এটি পরবর্তী প্রজন্মের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার একটি প্রক্রিয়া। সেটা বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দিয়েই করতে চায় বিসিবি। মাহমুদ এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘এটা তো ব্যাটন। কাউকে না কাউকে তো ব্যাটন নিতেই হবে। তামিম, রিয়াদ, সাকিব, মুশফিক, মাশরাফি আজ (দলে) নেই—এরা তো বাংলাদেশ ক্রিকেটের আইকন। এরা তো সারা জীবন খেলবে না।’
সিরিজটিকে তরুণদের পরীক্ষা হিসেবেই দেখছেন মাহমুদ। তাঁর কথা, ‘অ্যাসিড টেস্ট বলতে, আমরা কিছু ছেলেকে দেখতে চাই। যারা সম্ভাবনাময়, তাদের নিজেদের সেরা জায়গায় খেলিয়ে ওদের আমরা দেখতে চাই, কী করে। সিনিয়রদের সম্পর্কে আমাদের জানা আছে। জানি কী পারে, না পারে। প্লেয়ারদের পুরো সিরিজে সুযোগ দেওয়া একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। একটা ম্যাচ খেলার পর গ্যাপ দিয়ে আরেকটা ম্যাচ খেলিয়ে তো বিচার করা যায় না। এর জন্য একটু সময় দেওয়াও দরকার। একটা না একটা সময় আমাদের তো ঘুরে দাঁড়াতে হবেই। পালাবদলের সময় যে এখনই শুরু হয়ে গেছে, সেটা বলব না। এখনো সিনিয়র খেলোয়াড়দের মধ্যে সামর্থ্য আছে। জুনিয়র খেলোয়াড়দের মধ্যে ঠিকমতো তুলে ধরাটাও আমাদের কাজ।’
মাহমুদউল্লাহর টি-টোয়েন্টি ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন সাবেক এই অধিনায়ক। জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়ে তিনি অধিনায়কত্ব তো হারিয়েছেনই, দলেও রাখা হয়নি এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে। তবে ২০ ওভারের খেলায় মাহমুদউল্লাহকে এখনই বাতিলের খাতায় ফেলতে চান না মাহমুদ, ‘রিয়াদ দলে একটা গুরুত্বপূর্ণ রোল প্লে করতে পারে, সেটা আমরা সবাই বিশ্বাস করি। সে জন্য তার অধিনায়ক হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ না। সে এত দিন নেতৃত্ব দিয়েছে। হয়তো আমাদের টি-টোয়েন্টি দলটা ওইভাবে মেলে ধরতে পারেনি। কিন্তু এখন রিয়াদ ওই চাপ থেকে বেরিয়ে এসে খেলুক। তার পারফরম্যান্সটা আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।’
এ জাতীয় আরো খবর..