×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৭-২৫
  • ৫২ বার পঠিত
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। রাজধানীর সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থেকে গতকাল রবিবার পর্যন্ত এক হাজার ৮৩৭ জন চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীর চাপ বেশি। এখানে গতকাল পর্যন্ত ভর্তি হয়েছিল ৬৪৩ জন।

গতকাল ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা ছিল ৪৩। এ দিন ১০ জন নতুন ভর্তি হয় এবং ১০ জন হাসপাতাল ছেড়ে যায়। এই হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বেশির ভাগ রোগীই আসে মুগদা, মাণ্ডা এবং এর আশপাশের এলাকা থেকে। হাসপাতালের বিশ্লেষণে এ তথ্য পাওয়া যায়।

গতকাল মুগদা হাসপাতালে গিয়ে ডেঙ্গুর বিস্তার, এবারের রোগীদের লক্ষণ এবং চিকিৎসা নিয়ে কথা বলে জানা গেছে, আগের চেয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে।

অভিজ্ঞতা থেকে হাসপাতালগুলো সুচিকিৎসা দিতে পারছে। তাই মৃত্যু কম। মুগদা হাসপাতালে এখন পর্যন্ত কোনো ডেঙ্গু রোগী মারা যায়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গত বছরের এই সময়ের তুলনায় এবার রোগীর সংখ্যা বেশি। চিকিৎসকরা বলেন, রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তবে রোগের প্রভাব অতটা তীব্র নয়। গত বছরের মতো এবার রোগীদের রক্তে প্লাটিলেট খুব দ্রুত গতিতে কমছে না। ডেঙ্গু হেমোরেজিক ও ডেঙ্গু শক সিনড্রোম রোগী দেখা যায়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকাল ৮টা থেকে রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬৫ রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে  রাজধানীতে ভর্তি হয়েছে ৫৯ জন। গতকাল দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ২৯৯। ঢাকার হাসপাতালগুলোতে ভর্তি ছিল ২৩৫ জন।   

মুগদা হাসপাতালের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১ জুন থেকে গত দেড় মাসে মাণ্ডার অন্তত ১৮০ জন এবং মুগদার ১৫২ জন এই হাসপাতালে ভর্তি হয়। এ হিসাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মনে করছে, এই দুই এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি। চিকিৎসকরা বলেন, মুগদা ও মাণ্ডা বেশি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। জলাবদ্ধতা বেশি। খানাখন্দ ও নির্মাণাধীন ভবনগুলোতে পানি জমে থাকায় ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার বিস্তার বেশি হচ্ছে।   

দুই দিন আগে এখানে মাণ্ডা থেকে এসে ভর্তি হওয়া সুমাইয়া আক্তার (২৪) কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শরীর কাঁপানো জ্বর, তীব্র ব্যথা ও বমি ভাব নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হই। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। শরীর খুবই দুর্বল। খাবার খেতে ইচ্ছা করে না। ’

হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. নাজিম আল আজাদ কালের কণ্ঠকে বলেন, বৃষ্টি কম হওয়ায় রোগী এখন সহনীয় পর্যায়ে আছে। গত কয়েক দিনে বৃষ্টি বেড়েছে। এভাবে বৃষ্টি হলে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়বে, হাসপাতালে রোগীও আসবে বেশি।

ডা. নাজিম বলেন, এক রাতের মধ্যে প্লাটিলেট কমে তলানিতে আসার রোগী এবার তেমন দেখা যাচ্ছে না। হাসপাতালের চিকিৎসাব্যবস্থা এবং রোগীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ায় মৃত্যু কম। তবু সামনের কয়েক মাস সবাই সতর্ক থাকতে হবে।

মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. নিয়াতুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, করোনা ও ডেঙ্গুর লক্ষণ অনেকটা একই। তাই লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে এলে রোগীদের দুটি পরীক্ষাই করা হয়। রোগ শনাক্ত হওয়ার পর চিকিৎসাপ্রক্রিয়া শুরু হয়। তিনি বলেন, করোনা পরীক্ষা ২৪ ঘণ্টা করা হয়। রাত ১০টা পর্যন্ত ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়।   

নিয়াতুজ্জামান বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে মাণ্ডা ও মুগদার রোগী বেশি। অন্য রোগীরাও আশপাশের এলাকার। তিনি বলেন, আগের বছরের তুলনায় এবার রোগের লক্ষণের তীব্রতা কিছুটা কম।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের মূল ভবনের দশম তলায় পৃথক ওয়ার্ড আছে। মেডিসিন চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছে। আগস্টে রোগী বাড়লে আরো ওয়ার্ড বরাদ্দ দেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat